ঢাকা     বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ১২ ১৪৩১

২১ ঘণ্টা ধরে জ্বলছে ছয়তলা ভবন!

নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৮, ৯ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১৪:২৯, ৯ জুলাই ২০২১
২১ ঘণ্টা ধরে জ্বলছে ছয়তলা ভবন!

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড কারখানার আগুন ২১ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট কাজ করছে। টানা ২১ ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বলতে থাকায় ছয়তলা ভবনটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

শুক্রবার (৯ জুলাই) সকালে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাসেল শিকদার এসব তথ‌্য নিশ্চিত করেছেন।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজন নিহত হয়েছেন। তারা হলেন—স্বপ্না রানী (৪৪), মিনা আক্তার (৪৩) ও মোরসালিন (২৪)। এছাড়া, প্রায় অর্ধশত শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশ রূপগঞ্জের ইউএস-বাংলা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। বাকিরা ঢাকা মেডিক‌্যাল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।

আরো পড়ুন:

শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ভবনটির পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় আগুন জ্বলছে। কারখানাটির পঞ্চম তলার একপাশে সেমাই, সেমাই ভাজার তেল, পলিথিন এবং অপর পাশে কারখানার গুদাম আছে বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা। কারখানার ষষ্ঠ তলায় কার্টনের গুদাম।

ওই কারখানার শ্রমিকরা জানিয়েছেন, কারখানার চতুর্থ তলায় ললিপপ, তরল চকলেট, তৃতীয় তলায় অরগানিক পানীয় (জুস, লাচ্ছি), দোতলায় টোস্ট বিস্কুট, বিভিন্ন ধরনের পানীয় এবং নিচতলায় বাক্স ও পলিথিন তৈরির কারখানা।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জুস কারখানার ছয়তলা ভবনের নিচতলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে ভবনটি থেকে লাফিয়ে পড়েন শ্রমিক স্বপ্না রানী (৪৪) ও মিনা আক্তার (৩৪)। তারা ঘটনাস্থলেই মারা যান। এরপর মোরসালিন (২৮) নামের একজন শ্রমিক প্রাণ বাঁচাতে ওই ভবনের তৃতীয় তলা থেকে লাফ দেন। মোরসালিনকে রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কারখানাটিতে প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক কাজ করলেও আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবনটিতে ১ হাজার থেকে ১২০০ শ্রমিক কাজ করতেন বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কারখানাটির ভেতরে বিভিন্ন রাসায়নিকসহ দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ভবনটিতে ফাটল ধরায় আরও সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, সারা রাত চেষ্টা চালানোর পর ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আগুন কিছুটা কমে আসে।

শুক্রবার ভোর থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কারখানা এলাকায় স্বজনদের ভিড় বাড়ছে। তাদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে কারখানা এলাকার পরিবেশ।

রাকিব/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়