বাগেরহাটে ভুয়া স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
বাগেরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, ডাক বিভাগ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন জায়গায় চাকরির সুযোগ রয়েছে। এজন্য প্রত্যেক পদের অনুকূলে মাত্র ৪০ হাজার করে টাকা দিতে হবে। যোগদানপত্র হাতে পেয়ে টাকা দিলেই চলবে।
ভুয়া স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রতারক মো. দুলালের এমন কথায় রাজী হয়েছিলেন বাগেরহাটের কয়েকজন বেকার যুবক। খোঁজখবর নিয়ে বেকার যুবকরা দুলালের প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে বাগেরহাট মডেল থানায় জানান।
ভুক্তভোগীরা দুলালকে টাকা নেওয়ার জন্য শুক্রবার (১৬ জুলাই) বিকেলে বাগেরহাট মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুলের (ম্যাটস) গেটে আসতে বলেন। পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ম্যাটস-এর সামনে থেকে বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশ দুলালকে হাতে নাতে গ্রেপ্তার করে। পরে দুলালের ভাড়া বাসা থেকে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সাতটি ভুয়া নিয়োগপত্র ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ডকুমেন্টস উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার মো. দুলাল কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সবুজপাড়া এলাকার মো. জাহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি বাগেরহাট শহরে বাসাভাড়া নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পরিচয়ে এধরনের প্রতারণা করে আসছিলেন।
থানায় অভিযোগ দায়েরকারী বাগেরহাট সদর উপজেলার আলোকদিয়া গ্রামের মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘‘মুনিগঞ্জ ব্রিজের নিচের একটি দোকানে চা খাওয়ার সময় মো. দুলালের সঙ্গে আমার পরিচয়। তখন তিনি আমাদের মাইমুন হাসান হিসেবে পরিচয় দেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় আমাকে চাকরির অফার দেয়। আমার সঙ্গে আরও কয়েকজন চাকরির জন্য রাজি হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিয়োগের জন্য ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে।
‘তার কথায় আমরা সম্মতি দিলে, তিনি যোগদানপত্র দেওয়ার কথা বলে। পরবর্তীতে আমরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি, মাইমুন নামের কোন ব্যক্তি বাগেরহাট স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি করেন না। আমাদের কাছে সন্দেহ হলে আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানাই।”
চাকরি প্রত্যাশী বোগেরহাট সদর উপজেলার চরগা গ্রামের সফরুল আমিন আকাশ ও মেহেদী হাসান বলেন, ‘বেকার থাকার কারণে দুলালের কথায় রাজি হয়ে টাকা দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের আরও খোঁজ খবর নেওয়ার প্রয়োজন ছিল।’
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মাহমুদ হাসান বলেন, ‘মেহেদী হাসান নামের এক যুবকের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা মো. দুলালকে গ্রেপ্তার করেছি। তার ভাড়াবাসা তল্লাশী করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সাতটি যোগদানপত্রসহ প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বেশকিছু ডকুমেন্টস উদ্ধার করেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে অপরাধ স্বীকার করেছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নিয়মিত মামলা দায়েরপূর্বক আদালতে সোপর্দ করা হবে। এছাড়াও তার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।’
টুটুল/সনি