ঢাকা     রোববার   ৩০ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ১৭ ১৪৩১

সেই কুমির এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে 

ফরিদপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫১, ১১ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ১৭:০১, ১১ আগস্ট ২০২১
সেই কুমির এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে 

ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের জলাধার থেকে উদ্ধার হওয়া সেই কুমিরটি গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে স্থানান্তর করা হয়েছে। 

বুধবার (১১ আগস্ট) দুপুরে কুমিরটিকে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেন সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবিরসহ কর্মকর্তারা। 

হাওলাদার আজাদ কবির জানান, কুমিরটি উদ্ধারের পর ফরিদপুর থেকে খুলনা নিয়ে আসা হয়। কুমিরের লিঙ্গ পরীক্ষা করে দেখা যায় এটি নারী কুমির। এর দৈর্ঘ্য সাত ফুট ও চওড়া দেড় ফুট। গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে পুরুষ কুমির রয়েছে, সেজন্য কুমিরটিকে সাফারি পার্কে রাখার সিদ্ধান্ত নেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

তিনি আরও জানান, কুমিরটির সব ধরনের পরীক্ষা শেষে সুস্থ্য অবস্থায় বুধবার দুপুরে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আরও পড়ুন- অবশেষে কুমিরটি ধরা পড়লো এলাকাবাসীর জালে

এর আগে সোমবার (৯ আগস্ট) দুপুরে ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের ৩৮ দাগ এলাকার জলিল মোল্লার ডাঙ্গী গ্রামের জলাধারের কাছে ওই কুমিরটি একটি হাঁস খেতে আসলে এলাকাবাসী দেখে ফেলেন। এরপর সবাই মিলে কুমিরটিকে জাল দিয়ে আটক করেন। 

একই দিন সন্ধ্যায় উদ্ধারকৃত কুমিরটিকে ফরিদপুর থেকে নিয়ে যান খুলনার বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৎস্য বিশেষজ্ঞ মো. মফিজুর রহমান চৌধুরী। রাতে বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও পূনর্বাসন কেন্দ্রে রাখা হয়। পরদিন মঙ্গলবার কুমিরের লিঙ্গ পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। 

জলিল মোল্লার ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা আরশাদ শেখ বলেন, জলাধারের এক কোনার দিকে একটি হাঁস খেতে আসলে গ্রামের কয়েকজন দেখে সবাইকে খবর দেয়। পরে সবাই মিলে জাল দিয়ে কুমিরটিকে আটক করা হয়। গত ১৬ দিন আমরা এলাকাবাসী খুব আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে ছিলাম। এখন কুমিরটি আটক হওয়ায় স্বস্তি পেয়েছি।

জানা যায়, ফালুর খাল হিসেবে পরিচিত ওই জলাধারে গত ২৪ জুলাই কুমিরটিকে দেখতে পায় এলাকাবাসী। এরপর গত ২৮ ও ৩১ আগস্ট কুমিরটিকে ধরতে দুই দফা অভিযান চালায় প্রাণি সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের কর্মকর্তারা। কুমিরটি জালে আটকা পড়ে, কিন্তু প্রতিবারই জাল ছিড়ে বের হয়ে যায়। দুইটি অভিযান পরিচালনা করা হলেও একে আটক করা সম্ভব হয়নি।

ওই এলাকার বাসিন্দা আসলাম হোসেন জানান, ২৪ জুলাই সালাম খাঁর ডাঙ্গী গ্রামের জেলে হজরত মিয়া (৩৫) পদ্মা নদী থেকে আনুমানিক চার কেজি ওজনের একটি বোয়াল মাছ ধরেন। মাছটি তাজা রাখার জন্য মাছের মুখে দড়ি বেধে জলাশয়ের মধ্যে চুবিয়ে রাখেন। কিছুক্ষণ পর তিনি মাছটি তুলে আনার জন্য দড়ি ধরে টান দিলে ওই জলাধারে একটি কুমির দেখতে পান।

নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান বলেন, কুমিরটি ধরার জন্য এর আগে দুটি অভিযান ব্যর্থ হয়। ফলে এলাকাবাসীর মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কুমিরটিকে এলাকাবাসী আটক করে। এরপর একে প্রাণী সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কুমিরটি আটক হওয়ায় স্বস্তি ফিরে এসেছে এলাকাবাসীর মাঝে।

উজ্বল/মাহি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়