ঢাকা     সোমবার   ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১ ১৪৩১

মুন্সীগঞ্জে হিমাগারে আলুর পচন, দুশ্চিন্তায় আলুচাষি 

মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:০১, ১৭ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ২০:৫৭, ১৭ আগস্ট ২০২১

চলমান লকডাউনের কারণে রপ্তানি কমে যাওয়ায় পাইকারি বাজারে কমেছে আলুর দাম। ফলে  উৎপাদনের শীর্ষে থাকা মুন্সীগঞ্জের আলুচাষিরা বিপাকে পড়েছেন। তাদের শঙ্কা আরো বাড়িয়ে তুলেছে হিমাগারে আলুর পচন দেখা দেয়ায়।

এমনিতেই উৎপাদন ও সংরক্ষণ খরচের অর্ধেক দামে জেলার বিভিন্ন হিমাগারে মজুদ করা আলু বিক্রি হচ্ছে। তার ওপর মজুদ করা বেশির ভাগ আলুতে ধরেছে পচন। যে কারণে জেলার আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা এ বছর বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে সদর উপজেলার বিভিন্ন হিমাগার ঘুরে দেখা গেছে জমি থেকে উত্তোলন শেষে হিমাগারে মজুদ করে রাখা বেশিরভাগ আলুতে পচন ধরেছে। এ সময় পচা আলু নদীতে ফেলে দিতেও দেখা গেছে। করোনার কারণে পরিবহন সংকটসহ নানা জটিলতায় রপ্তানি কমে যাওয়ায় আলুগুলো দীর্ঘদিন ধরে হিমাগারে রাখা হয়েছিল।

সদর উপজেলার আমির হোসেন নামে এক আলুচাষি বলেন, ‘এ বছর একাধিক সিন্ডিকেট ও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজির কারণে আলুর পাইকারি বাজার মূল্য কমে গেছে। ফলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি আমরা। তার উপর আলুতে পচন ধরলে পুঁজি হারিয়ে পথে বসতে হবে।’

হিমাগারে আলু মজুদকারী রশিদ মেম্বার বলেন, ‘আলু বিক্রি করে এবার উৎপাদন খরচও উঠছে না। বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে জমি থেকে এসব আলু উত্তোলন শেষে মজুদ করেছিলাম। বাজার মূল্য কমে যাওয়ায় এর অর্ধেক টাকাও উঠবে না।’

সিরাজদিখান উপজেলার করিম হোসেন, রফিক আলী ও রহমান শেখসহ  আরো কয়েকজন কৃষক জানান, হিমাগারে মজুদ করে রাখা আলু প্রতি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে সাড়ে ১২ টাকা। অথচ সংরক্ষণ ব্যয় ও উৎপাদন খরচ মিলিয়ে এর খরচ পড়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। তবে খুচরা বাজারে এসব আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। অর্থাৎ পাইকারি ও খুচরা বাজারে প্রতি কেজিতে তফাৎ ৮ থেকে ১৩ টাকা। এতে ফায়দা লুটছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। সরকার নির্ধারিত মূল্য বেঁধে দেয়ার দাবি জানান তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খুরশিদ আলম বলেন, ‘সিন্ডিকেটের কারণে সংরক্ষণকারী কৃষক দাম পাচ্ছে না। যথাযথ মনিটরিং-এর মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থাপনা সঠিক জায়গায় নিয়ে আসা গেলে কৃষকের লোকসান কমিয়ে আনা সম্ভব। তাছাড়া নিয়ম মেনে যথাযথভাবে হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করা হয় না বলে বেশিরভাগ আলুতে পচন ধরেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে শীঘ্রই সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা ও প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসার পর্যালোচনা চলছে।’

মুন্সীগঞ্জ জেলায় এবার ৩৭ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদন হয়েছে ১৩ লাখ মেট্রিক টন। জেলার ৬৭টি হিমাগারে সংরক্ষণ করা আছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন আলু। 
 

রতন/তারা


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়