ঢাকা     রোববার   ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ২ ১৪৩১

জুনায়েদ বাবুনগরীর জীবন ও কর্ম

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৪, ১৯ আগস্ট ২০২১  
জুনায়েদ বাবুনগরীর জীবন ও কর্ম

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। হেফাজতে ইসলামের আমির এবং সমগ্র বাংলাদেশে হক্কানী আলেমদের অভিভাবক হিসেবে উল্লেখ করা হয় তাকে।

বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রামের বেসরকারি সিএসসিআর হাসপাতালে তিনি মারা যান

১৯৫৩ সালের ৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার বাবুনগর ইউনিয়নের তার জন্ম।  

আরো পড়ুন:

জন্মের পর মাত্র ৫ বছর বয়সে নিজ গ্রামের মাদ্রাসায় শিক্ষাজীবন শুরু করেন বাবুনগরী। এই সময় তিনি আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রাসায় ভর্তি হন। এখানে তিনি মক্তব, হেফজ ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। কুরআনের হেফজ শেষ করার পর আজহারুল ইসলাম ধর্মপুরীর কাছে তিনি পুরো কুরআন মুখস্থ শুনিয়েছিলেন। এরপর তিনি ভর্তি হন দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায়। ১৯৭৬ সালে তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। 

একই বছর তিনি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পাকিস্তান যান। ১৯৭৬ সালে করাচিতে অবস্থিত জামিয়া উলুমুল ইসলামিয়ায় তাখাচ্ছুছাত ফিল উলুমুল হাদিস তথা উচ্চতর হাদিস গবেষণা বিভাগে ভর্তি হন। ২ বছর হাদিস নিয়ে গবেষণা সম্পন্ন করে তিনি আরবি ভাষায় ‘সীরাতুল ইমামিদ দারিমী ওয়াত তারিখ বি শায়খিহী’ (ইমাম দারিমী ও তার শিক্ষকগণের জীবন বৃত্তান্ত) শীর্ষক অভিসন্দর্ভ জমা দেন।  এই অভিসন্দর্ভ জমা দেওয়ার পর তিনি জামিয়া উলুমুল ইসলামিয়া থেকে হাদিসের সর্বোচ্চ সনদ লাভ করেন। পাশাপাশি তিনি ওয়ালী হাসান টুঙ্কির কাছে সুনান আত-তিরমিজী ও মুহাম্মদ ইউসুফ বিন্নুরীর কাছে সহীহ বুখারী দ্বিতীয় বারের মতো অধ্যয়ন করেন।

দুই বছর পর দেশে ফিরে বাবুনগরী ১৯৭৮ সালের শেষের দিকে নিজ ইউনিয়ন বাবুনগর মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। বাংলাদেশের মাদ্রাসাসমূহের মধ্যে সর্বপ্রথম বাবুনগর মাদ্রাসায় তিনি উচ্চতর হাদিস গবেষণা বিভাগ চালু করেন। ২০০৩ সালে তিনি দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায় যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক নিযুক্ত হন। এ পর্যন্ত তার শিক্ষকতা জীবনে ছাত্র সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি। 

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাবুনগরী ছিলেন এর আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ঘনিষ্ট সহচর।  গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে মাদ্রাসার দায়িত্ব মজলিসে শুরাকে দিয়ে দেন। ওই দিনই আল্লামা শফী মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে বাবুনগরীসহ তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠিত হয়। পরে মজলিশে শুরার সিদ্ধান্তে জুনায়েদ বাবুনগরী মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস ও শিক্ষা সচিব হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এই পদে দায়িত্বে ছিলেন।

২০১০ সালে বাবুনগরীকে মহাসচিব করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সংগঠনটির আমীর মৃত্যুবরণের পর ১৫ নভেম্বর সংগঠনের একটি কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মাধ্যমে সর্বসম্মতিক্রমে বাবুনগরী আমির নির্বাচিত হন। পরে কমিটি বিলুপ্তির পরও আহ্বায়ক কমিটিতে তাকে আমির নির্বাচিত করা হয়।

পারিবারিক জীবনে বাবুনগরী বিবাহিত। তার ৫ মেয়ে ও ১ ছেলে রয়েছে।

রেজাউল/এসবি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়