ঢাকা     শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ১ ১৪৩১

কুদরত আলীর ভাস্কর্য উদ্যান

রেজাউল করিম, গাজীপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৫, ২৩ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ১৩:২৯, ২৩ আগস্ট ২০২১
কুদরত আলীর ভাস্কর্য উদ্যান

ভাস্কর্য উদ্যান। স্থান: গাজীপুর

কুদরত আলী। একজন ভাস্কর্য শিল্পের কারিগর। ইতোমধ্যে তিনি বিশাল এক দিঘির পাড়ে গড়ে তুলেছেন একটি ভাস্কর্য উদ্যান। বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও পাখি দিয়ে নিপুণ হাতে উদ্যানটি সাজিয়েছেন তিনি।

কুদরত আলী প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ছাড়া অর্জন করেছেন অসামান্য প্রতিভা। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হায়দারবাদ এলাকার সুকুন্দিরবাগ গ্রামে তার বাড়ি। ওই গ্রামেই রয়েছে বিশাল এক দিঘি। দিঘির পাড়ে ছোট্ট একটা পাহাড়ের টিলার মতো জায়গা নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে একটি পার্ক, যে পার্কের নাম ভাস্কর্য উদ্যান। এর কারিগর কুদরত আলী নিজেই।

পার্কের মনোরম দৃশ্য দেখলে যে কারো মন জুড়িয়ে যাবে। ভ্রমণ পিপাসু ও প্রকৃতি প্রেমীদের মনোরঞ্জনের জন্য কী নেই এ পার্কে! নানা প্রজাতির ফুল গাছে ফুটে আছে অজস্র ফুল। রয়েছে বিভিন্ন মহান ব্যক্তি ও পশুপাখির ভাস্কর্য, বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য রয়েছে বিশাল আকৃতির বাঘ, হরিণ, জিরাফ, জেব্রা, হাতি, ঈগল পাখি ও নানা রকম প্রাণীর ভাস্কর্য। দূর থেকে দেখে মনে হবে যেন জীবন্ত প্রাণীর অভয়ারণ্য।

বিশ্রামের জন্য ছোট ছোট করে তৈরি করেছেন ঘুন্টি ঘর, যেখানে বসে আরাম করতে পারবেন। বিশাল দিঘির সৌন্দর্য উপভোগ করাতে দিঘির ঘাটে তৈরি করেছেন পাকা ঘাট।  ঘাটের দুই পাশে বসিয়েছেন কুমিরের ভাস্কর্য। এসব ভাস্কর্য দেখে আপনার মনে হবে যে এগুলো আসল। 

আপনার মানসিক প্রশান্তির জন্য ঘুরে আসতে পারেন কুদরত আলীর ভাস্কর্য উদ্যানে। বিশেষ করে শিশুদের জন্যতো এটা একটা স্বর্গ রাজ্য। ভাস্কর্য উদ্যানে প্রবেশ করতে নামেমাত্র এন্ট্রি ফি দিতে হবে। যা তার উদ্যানের সৌন্দর্যের কাছে খুবই সামান্য। 

এ বিষয়ে কুদরত আলী বলেন, আমার অবস্থা আরও সচ্ছল হলে কোনো এন্ট্রি ফি নিতাম না। তিনজন কর্মচারী সারাদিন দেখভাল করেন, ফি তাদের উদ্দেশ্যেই নেওয়া। আমার মূল উদ্দেশ্য শিশুদের বিনোদন দেওয়া।

কুদরত আলীর সংসার চলে স্যানিটারি কোয়ার চাক, স্লাব, নইচা, ভেন্টিলেটর, চারি আর ভাস্কর্য বিক্রি করে। ছোট ছোট পশুপাখি যেমন বক বিক্রি করেন ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। একটি জেব্রা বা বাঘ তৈরি করতে সময় লাগে দেড়মাস। আর সেগুলো বিক্রি হয় ২০-২৫ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, আমি ছোট থেকেই মাটি দিয়ে বিভিন্ন জিনিস বানানোর চেষ্টা করতাম। কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না নিয়েও আল্লাহর রহমতে চোখ দিয়ে যা দেখি ইচ্ছে করলেই তা তৈরি করতে পারি। কেউ যদি ভাস্কর্য কিনতে চান সেটাই আমার আয়ের উৎস কিন্তু সেটাও খুবই সামান্য।  মনের ইচ্ছা, পার্কটাকে আরও বড় পরিসরে সুন্দর করে সাজিয়ে মানুষকে আনন্দ দেবো। সবাই যেন শিশুদের নিয়ে আমার উদ্যানে এসে সুন্দর পরিবেশে ভালো সময় উপভোগ করতে পারেন। আমার মূল উদ্দেশ্য শিশুদের বিনোদন দেওয়া।

/মাহি/ 


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়