ঢাকা     বুধবার   ০১ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ১৮ ১৪৩১

পানি বৃদ্ধি: পদ্মাপাড়ের মানুষের সংকটময় সময়

রাজবাড়ী সংবাদদাতা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৫, ২ সেপ্টেম্বর ২০২১  
পানি বৃদ্ধি: পদ্মাপাড়ের মানুষের সংকটময় সময়

পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে পদ্মাপাড়ের চর বরাটের দুশোর বেশি পরিবার।

বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আহাদ জানান,জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, সদর উপজেলার মাহেন্দ্রপুর পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং পাংশা উপজেলার সেনগ্রাম পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে  বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সকালে জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের চর বরাট এলাকায় সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রায় হাজারো মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন পার করছে।

আরো পড়ুন:

স্থানীয় বাচ্চু শেখ জানান,প্রায় ১ মাসের মত তারা পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন।  লকডাউন শেষে এই পানিবন্দী হয়ে যাওয়ায় তাদের কেন কাজ নেই। নেই কেন আয়ের উৎস। এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি অনুদানও মেলেনি।

শুভ প্রামাণিক নামের একজন জানান, এলাকায় খাবার পানির সংকট আছে। তাছাড়া গবাদীপশুর খাবারের সংকটও দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা হয় ষাটোর্দ্ধ নাছিমা বেগম চকির ওপর বসে বাদাম ভেজে খাচ্ছেন।  তিনি জানালেন, পানিতে সব তলায় গেছে। রান্না ঘরে পানি। সবাই চৌকির ওপর রান্না-বান্না করতেছি। খাবার কিছু নাই। তাই বাদাম ভাজতেছি, পেটে তো কিছু দিতে হইবো।

সবুজ মন্ডল নামের আরেকজন জানান, ১ মাস ধরে আমরা পানি বন্দী। খাবারের কিছু নাই। আয় রোজগার নাই। মেম্বার চেয়ারম্যানের দেখা নাই।

আম্বিয়া খাতুন নামের এক বৃদ্ধার অভিযোগ, এখন পর্যন্ত কোন মেম্বার চেয়ারম্যানের দেখা পেলাম না। 

সালমা বেগম বলেন, বাচ্চা পোলাপান নিয়ে খুবই বিপদে। পানির গভীরতা একেক জায়গায় একেক রকম থাকায় পানিতে কখন পোলাপান ডুবে যায় সেটা নিয়ে ভয়ে থাকি। তাছাড়া সাপ,ব্যাঙ্গে চৌকির ওপর উঠে বসে থাকে।

সামসু খা জানান, এই পচা পানিতে থাকতে থাকতে পচড়া,চুলকানি হচ্ছে। এছাড়া ছোট বাচ্চাদের জ্বর ঠান্ডা তো লেগেই আছে।

জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুল হক জানান, পদ্মার পানি নতুন করে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলেও নতুন করে কোন এলাকা প্লাবিত হয় নাই। আমাদের তথ্যমতে ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। প্রায় সবার কাছেই সরকারী সাহায্য পেয়েছে। বাকিদের কাছে শনিবারের মধ্যে পৌছে যাবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক এস.এম সহীদ নূর আকবর জানান, পদ্মার পানিতে জেলার মোট ১৫১ হেক্টর জমি প্লাবিত হয়েছে।

রাজবাড়ি/সুকান্ত/এমএম

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়