টাঙ্গাইলে কমছে পানি, বাড়ছে ভোগান্তি
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

টাঙ্গাইলে যমুনাসহ ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে বানভাসি মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, গো-খাদ্য, জ্বালানি ও শৌচাগারের অভাব তীব্র হচ্ছে। বন্যায় জেলার ৭৫০ হেক্টর ফলসি জমি নিমজ্জিত হয়েছে।।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ২৪ সে.মি কমে বিপদসীমার ৩৩ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঝিনাই নদীর পানি ১৫ সে.মি কমে বিপদসীমার ৭২ সে.মি এবং ধলেশ্বরী নদীর পানি ৭ সে.মি কমে বিপদসীমার ৭২ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া বংশাই নদীর পানি ৪ সে.মি বেড়ে বিপদসীমার ২১ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।।
বন্যার পানি জেলার ৮৭ টি স্কুল ও মাদ্রাসায় প্রবেশ করেছে। এছাড়াও জেলার ৭৫০ হেক্টর ফলসি জমি নিমজ্জিত হয়েছে। পাঁচটি উপজেলায় ৮০ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বানভাসি মানুষের জন্য জেলা প্রশাসন ৪০ টন জিআর-এর চাল ও নগদ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।।।
কালিহাতী উপজেলার মগড়া গ্রামের বাসিন্দা হারুন মিয়া বলেন, ‘বন্যার পানি কমলেও গরু ছাগলের খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও রান্না করার জ্বালানি ও শৌচাগারের সংকটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।।’
কালিহাতীর দশকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মিয়া বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের সাতটি মৌজার প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পরিবার পানিবন্ধি রয়েছেন। বিপুল পরিমান জায়গার রোপা আমন তলিয়ে নষ্ট হয়েছে। খাদ্যেরও সংকট দেখা দিয়েছে। ’
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাতুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জিন্নাহ বলেন, ‘চলতি বন্যায় আমার ইউনিয়নের ১৩ টি গ্রামই প্লাবিত হয়েছে। ২০ হাজার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ৫ টন জিআরের বরাদ্দ পেয়েছি।।’
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ‘পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জেলার ৮০ কিলোমিটার নদী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। তুলনামূলকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে চেষ্টা করা হচ্ছে। ’
তিনি আরো বলেন, ‘পানি কমে গেলে স্থায়ীভাবে নদী তীর সংরক্ষণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলার ভূঞাপুর, কালিহাতী, টাঙ্গাইল সদর ও নাগরপুর এ চারটি উপজেলার বন্যা দুর্গতদের জন্য ৪০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের জন্য প্রতিটি উপজেলায় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তালিকা পেলে যথাস্থানে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।
কাওছার/মাসুদ