ঢাকা     সোমবার   ০২ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ১৭ ১৪৩১

স্কুলের মাঠে জলাশয়

কাঞ্চন কুমার, কুষ্টিয়া || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৫, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ১২:২৯, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১
স্কুলের মাঠে জলাশয়

স্কুলের খেলার মাঠটি এখন জলাশয়। সেখানে খেলাধুলার সুযোগ নেই। জলকেলি করছে হাঁসের দল। বছরে তিন-চার মাস খেলাধুলা থেকে এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী দয়ারামপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও দয়ারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি বন্যায় প্লাবিত হয়ে জলাশয়ে পরিনত হয়েছে।  দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।  

দুই মাস ধরে মাঠটি পানির নিচে থাকায় স্কুল খুললেও খেলাধুলা ও প্রতিদিনের অ্যাসেম্বলি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টির পুরো মাঠ পানিতে থইথই করছে। অনেক ছাত্র তাদের প্যান্ট হাঁটু পর্যন্ত গুটিয়ে শ্রেণিকক্ষে যাওয়া আসা করছে। শ্রেণিকক্ষে যাওয়া আসার সময় ছাত্রীদের কাপড় ভিজে যাচ্ছে। ভেজা কাপড়ে তাদের অস্বস্তিতে ক্লাসে বসে থাকতে হচ্ছে।

কয়েকজন শিক্ষক জানান, এতে একদিকে শিক্ষার্থীরা ক্লাসের পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারে না, অন্যদিকে দিনের পর দিন এভাবে ভেজার কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানান, মাঠটি খানিকটা নিচু হওয়ায় বৃষ্টির পানি জমে দুই মাস ধরে পানির নিচে ডুবে আছে এবং আরো দুই থেকে তিন মাস এভাবেই ডুবে থাকবে। মাঠটি ভরাট করার জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করা হলেও কোনো ফল হয়নি।

ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া খাতুন বলেন, বছরের তিন চার মাস মাঠে হাঁটুপানি জমে থাকে। এতে আমরা খেলাধুলাসহ স্বাভাবিক হাঁটাচলাও করতে পারি না। ক্লাসে আসার সময় জামাকাপড় ভিজে যায়। যেকারণে নিয়মিত ক্লাস করলে ঠান্ডা লেগেই থাকে।

এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপার রাশিদুল ইসলাম জানান, প্রতিবছরই বর্ষার মৌসুমে স্কুল মাঠে বৃষ্টির পানি জমে যায়, পানি বের হবার কোন পথ না থাকায় তিন থেকে চার মাসের বেশি সময় ধরে মাঠে পানি জমে থাকে। ফলে শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। তাছাড়া মাঠে পানি জমে থাকার কারণে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরাও খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

দয়ারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শামসুল আলম জানান, বৃষ্টির সময় হলেই বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে যায়, এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসার সময় পানিতে পড়ে নানা দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টা জানিয়েছি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকেও একাধিকবার জানানো হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রশীদ ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার জালাল উদ্দিনও জরুরীভাবে খেলার মাঠটির জলাবদ্ধতা নিরসন করা প্রয়োজন বলে জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিতান কুমার মন্ডল বলেন, মাসিক মিটিংয়ে বিষয়টি জেনেছি। খুব দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুমারখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খাঁন বলেন জলাবদ্ধতা নিরসনে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কাঞ্চন কুমার/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়