‘আমাকে বাঁচাও, আমার গায়ে আগুন’
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম
নিহত মোমিনুল
সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর পরই চাচাতো ভাই ফরহাদকে ফোন দিয়েছিলো ডিপুর কম্পিউটার অপারেটর মোমিনুল। চিৎকার করে ভাইকে বলছিলো ‘আমাকে বাঁচাও, আমাকে বাঁচাও, আমার গায়ে আগুন’।
কয়েক মুহূর্ত পর সেই ফোনের শব্দ থেমে যায়। পরে পুড়ে অঙ্গার হওয়া লাশ মিলে মোমিনুলের। আহাজারি করতে করতে এসব তথ্য সাংবাদিকদের জানান মোমিনুলের চাচাতো ভাই ফরহাদ।
ডিপোর আগুনে যে পাঁচ জন নিহত হয়েছেন, এদের একজন মোমিনুল। অন্যদের পরিচয় এখনো শনাক্ত হয়নি।
মোমিনুলের ভাই ফরহাদ জানান, মোমিন মাত্র ৬ মাস আগে এই কনটেইনার ডিপোতে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি নিয়েছিলেন। সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে এই চাকরির পাশাপাশি মোমিনুল মাস্টার্স পরীক্ষা দেওয়ারও প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু আগুন সব শেষ করে দিলো।
ফরহাদ জানান, আগুন লাগার পর পরই মোমিনুল তাকে ফোন করে। এই সময় সে চিৎকার করে বলছিলো ভাই আমাকে বাঁচাও। আমাকে বাঁচাও। আমার সারা গায়ে আগুন ধরে গেছে। চারদিকে আগুন। আমাকে বাঁচাও। এর কিছুক্ষণ পরই মোমিনুলের কণ্ঠ থেমে যায়।
ফরহাদ আরও বলেন, আমি মোমিনুলকে বাঁচাতে পারেনি। আগুনে পুড়ে সে অঙ্গার হয়ে গেছে। আমাদের পরিবারের স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে গেছে।
মোমিনুলের বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া গ্রামে। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন মোমিনুল। পরিবারের একটু সচ্ছলতার জন্য পড়ালেখার মধ্যেই এই ডিপোতে চাকরি নেয় মোমিনুল। শনিবার গভীর রাতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের সামনে আহাজারি করতে দেখা যায় মোমিনুলের স্বজনদের।
বিএম কনটেইনার ডিপোর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ৫ জনের মধ্যে একমাত্র মোমিনুলের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে।
রেজাউল/এনএইচ