বৃষ্টিতে হাসি ফুটেছে আমন চাষিদের মুখে, সারে হতাশা
রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
মাঠে আমন রোপনে ব্যস্ত কৃষক
মৌসুম অনুযায়ী আষাঢ়-শ্রাবণ বৃষ্টির মাস। তবে এবার কিছুটা ছন্দপতন ঘটেছে বৃষ্টি হওয়ার ক্ষেত্রে। তীব্র তাপদাহের পর শ্রাবণের বৃষ্টি শুরু হয়েছে দেশের উত্তরের জেলা রংপুরে। ফলে বিনা সেচে অধিক উৎপাদনের আশায় আমান চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। এতে তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় হতাশ তারা।
কিছুটা দেরিতে হলেও বৃষ্টির পানি পেয়ে ফসল উৎপাদনে পুরোদমে জমিতে বেড়েছে কৃষকের ব্যস্ততা। এই মৌসুমে বৃষ্টি হওয়ায় সেচ খরচেও লাভবান হবেন কৃষকেরা।
কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, এ বছর রংপুর অঞ্চলে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬৩৬ হেক্টর জমিতে। এখন পর্যন্ত রোপণ সম্পন্ন হয়েছে ৪৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। আমন ফসলে সারের চাহিদা বিঘা প্রতি গড়ে ২৫ কেজি। তবে ফসল ফলানোর প্রতিযোগিতায় সারের ব্যবহারে এখনো সচেতন নন কৃষকরা। ফলে ফসল অনুযায়ী চাহিদার তুলনায় বেশি সার ব্যবহার করছেন তারা।
জানা গেছে, চাহিদা অনুযায়ী সারের মজুত পর্যাপ্ত রয়েছে রংপুরে। এ জেলায় ইউরিয়া সার রয়েছে ৩৯০০ মেট্রিক টন, টিএসপি ৫৮৮০ মেট্রিক টন, ডিএপি ৩১৮৬ মেট্রিক টন, এমওপি ৬৩৫১ মেট্রিক টন।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মাহবুবার রহমান বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাওয়ার পরপরই কৃষি অধিদপ্তর তৎপর হয়। ১ আগস্টের আগে যে মূল্যে সার কিনেছে ডিলাররা সেই মূল্যেই সার বিক্রি করতে হবে তাদের। আর তাই মনিটরিংয়ের কাজ অব্যাহত রাখা হয়েছে।
সারের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বিসিআইসি অনুমোদিত ডিলাররা বলেন, বর্তমান সারের দাম কিছুটা বেড়েছে। পর্যাপ্ত সার মজুত থাকায় মনে হয় না অস্বাভাবিক পরিস্থিতির শিকার হতে হবে কৃষকদের।
সার কিনতে আসা কৃষক আলী হোসেন বলেন , ‘ দুই দোন জমিতে ধান চাষ করি। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে উপকার হইছে। জমিতে সেচ দিতে হয় নাই। এই আবাদ দিয়ে সংসার চলে। বৃষ্টি হয়্যা বাড়তি খরচ কমছে। শুনছি সারের দাম বাড়ছে। কিন্তু আজকেও আগের দামেই সার কিনছি। ইউরিয়া প্রতি বস্তা ৮০০ টাকা। সারের দাম কম থাকলে আমাদের জন্য ভালো হয়। আবাদ করি পরিবার নিয়া সুখে- দুঃখে দিন কাটে।’
রংপুর মেট্রোপলিটন মাহিগঞ্জ -১ এর সার মনিটরিং দায়িত্বরত উপ সহকারী কৃষি অফিসার নুরুন্নাহার খানম বলেন, ‘সরকারের ভর্তুকি কমিয়ে আনতে সারের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী সার পর্যাপ্ত রয়েছে। নায্য মূল্যে সার বিক্রিতে মাঠে আমরা তৎপর। এখন পর্যন্ত আগের দরেই সার বিক্রি হচ্ছে।’
আমিরুল/ মাসুদ