ছেলেকে নিয়ে গর্ব করেন গ্রেনেড হামলায় নিহত মাহাবুবুরের পরিবার
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ছেলে মাহবুবুর রশিদের ছবি হাতে মা হাসিনা খাতুন ও বাবা হারুন-অর-রশিদ
ছেলে হারানোর কষ্ট কখনো ভোলার নয়। ছেলে নেই, সে আর আসবে না, তার স্মৃতি রয়ে গেছে, থাকবে আজীবন। একজন মার পক্ষেই জানা সম্ভব ছেলে হারানোর কষ্ট কতো। কিন্তু আমি মাহবুবুরের মা, এ কথা ভেবেই এখন গর্ববোধ করি।
এভাবেই নিজের অন্তরে পুষে রাখা কষ্টের কথাগুলো বলছিলেন ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় প্রাণ হারানো বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেহরক্ষী শহীদ মাহবুবুর রশিদের মা হাসিনা খাতুন।
হাসিনা খাতুন বলেন, ’২১ আগস্ট হামলার কিছুদিন আগেই মাহবুবুরকে একটি ঘড়ি উপহার দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। কয়েকদিন ব্যবহার করে স্মৃতিস্বরূপ ঘড়িটি আমার কাছে দিয়ে যায় সে। ঘড়িটার দিকে তাকালেই মনে পড়ে আমার মাহবুবুরের কথা। আমি মাহবুবুরের মা এ কথা ভেবেই এখন গর্ববোধ করি।’
নিহত মাহবুবুর রশিদের বাবা হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘আগস্ট মাস আসলেই সবাই মনে করে মাহবুবুরের কথা। আগস্ট মাসের আগে কেউ আমাদের খোঁজও নিতে আসে না। আমরা কি করছি? কি খাচ্ছি? কিভাবে বেঁচে আছি তার খোঁজ কেউ রাখে না? আপনারা এই দিন হলেই আসেন আমাদের বাড়িতে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মাহবুবুর আমার সন্তান ছিলো এ কথা ভাবতে আমার বুকটা গর্বে ভরে যায়। আমি এমন এক সন্তানের বাবা যে নিজের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছে।’
ছেলের কবরের পাশে হারুন-অর-রশিদ
শহীদ মাহবুবুর রশিদ কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার প্রত্যন্ত ফুলবাড়ীয়া গ্রামের গরিব কৃষক পরিবারের ছেলে ছিলেন। তিনি ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে হওয়া গ্রেনেড হামলায় নিহত হন। তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ছিলেন। ফুলবাড়ীতে শায়িত রয়েছেন এই বীর। সরকারিভাবে তার কবর সংরক্ষণ করা হয়েছে।
মাহবুবুরের মৃত্যুবার্ষিকীতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে রোববার (২১ আগস্ট) বিকেলে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
কাঞ্চন/ মাসুদ