ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৯ ১৪৩১

পাইকারি মুদি দোকানে বিক্রি নেমেছে অর্ধেকে

আমিরুল ইসলাম, রংপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৮, ২ সেপ্টেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৩:৫৮, ২ সেপ্টেম্বর ২০২২
পাইকারি মুদি দোকানে বিক্রি নেমেছে অর্ধেকে

ক্রেতা না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন এক মুদি দোকানদার

গত এক মাসের বেশি সময় ধরে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় রংপুরের পাইকারি দোকানগুলোতে বেচাকেনা আগের তুলনায় অর্ধেকে নেমেছে। ক্রেতা সরগরম দোকানগুলোর চিত্র এখন অনেকটা ভাটা পরার মতো। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মানুষের আয়ের তুলনায় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকে এখন প্রয়োজনের তুলনায় বাজার করছেন অর্ধেক। এতে করে পাইকারি দোকানগুলোতেও পণ্য বিক্রি কমে গেছে। 

শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর সিটিবাজার ঘুরে দেখা গেছে, অনেক দোকানদার ক্রেতা শূন্যে অলস সময় পার করছেন। 

আরো পড়ুন:

২০ বছর ধরে রংপুর সিটি বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী আবু বক্কর সিদ্দিক। তার কাছে মুদির দোকানের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দোকানগুলোতে বিক্রি কমে অর্ধেকে নেমেছে। আগে যেখানে দিনে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করতাম এখন সেখানে ৪০-৫০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করাও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘এক মাস আগে যেখানে একজন ক্রেতা দুই হাজার টাকার নিত্যপণ্য ক্রয় করতো সেখানে এখন একই ক্রেতা এক হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার খরচ করে। প্রত্যেকটি নিত্য পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা তাদের চাহিদার চেয়েও অনেক কম পণ্য ক্রয় করছেন।’ 

আবু বক্কর সিদ্দিকসহ বাজারের আরও কয়েজন ব্যবসায়ীর দেওয়া তথ্যমতে, গত একমাসের ব্যবধানে প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা। বিশেষ করে ১১০ টাকা কেজি দরের চিনিগুড়া চাল বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১২৫-১৩০ টাকা, ভাতের ২৮,২৯ জাতের চাল কেজিতে ৮-১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৬০-৬২ টাকা, ৬০ টাকার মিনিকেট চাল বৃদ্ধি পেয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকা।

এছাড়া ১০০-১১০ টাকার মসুরির ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা পাইকারি কেজি দরে। মনিহারী দোকানের প্রায় সব পণ্যের দামও অনেকটা বাড়তি।

সিটি বাজারে বাজার করতে আসা নগরীর তাজহাট এলাকার মনিরুজ্জামান বলেন, ‘শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় বাজার করতে এসেছি। কিন্তু জিনিসপত্রের যে দাম তাতে একটা হাজার টাকার কি বাজার করলাম তা বোঝাও যায় না। ডাল, তেল, চিনি, চাল, লবন, মসলা এসব পণ্যে খরচ সবসময় লাগে। এই আইটেমগুলো আমার ৫ সদস্যের পরিবারে এক সপ্তাহের জন্য কিনতে দুই হাজার টাকার বেশি লাগে। আয় কম খরচ বেশি তাই নিরূপায় হয়ে কম কম করে জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে।’

বাজাড়ে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চাল-ডালসহ প্রতিটি জিনিস   

মনিরুজ্জামানের মতো বাজার করতে আসা, উম্মেহানী, সালমা, হাবিবা, জাহিদ বাবুসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে একই ধরনের মন্তব্য পাওয়া যায়। তাদের সবাই জানান, নিত্যপণ্যের দাম যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে সেহারে মানুষের আয় বাড়েনি বরং নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের অবস্থা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ফখরুল আনাম বেন্জু বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাজারে যে অস্থিরতা বিশেষ করে তেল সংকটের কারণে আমাদের দেশে অনেক নিত্যপণ্যের উপর এর প্রভাব পরেছে। এতে করে বাজারগুলোতে প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। এই বর্ধিত দামে নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের জীবন জীবিকা অনেকটাই দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরও পুঁজিতে অনেক টানাপোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়