সেই মামুন জামিন পেয়েছেন, খায়রুনের মৃত্যুর রহস্য এখনো অজানা
নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
স্বামীর সঙ্গে খায়রুন নাহার
নাটোরে কলেজশিক্ষিকা খায়রুন নাহারের (৪০) মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া স্বামী মামুন হোসাইন (২২) জামিন পেয়েছেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। বিষয়টি এতোদিন গোপন ছিল।
আরো পড়ুন: ৬ মাস প্রেমের পর শিক্ষিকাকে বিয়ে করলেন কলেজছাত্র
মামুনের জামিনের বিষয়টি শনিবার (১৫ অক্টোবর) জানাজানি হয়। তবে খায়রুন নাহারের মৃত্যুর রহস্য এখনও জানা যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৮ সেপ্টেম্বর মামুনকে নাটোর আমলী আদালতে হাজির করা হয়। সে সময় শুনানি শেষে বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলজার রহমানের আদালত মামুনকে অস্থায়ী জামিন দেন। গত ২৩ সেপ্টেম্বর মামুনের জামিনের মেয়াদ বর্ধিত করেন আদালত। আগামী ২৫ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন বিচারক।
আরো পড়ুন: ফেসবুকে পরিচয় থেকে বিয়ে, শেষ হলো মৃত্যুতে
আসামিপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার স্বপন জানান, মামুন হোসেনকে আটকের ২৬ দিন পর বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) নাটোর আমলী আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তার জামিনের আবেদন করলে বিচারক অস্থায়ী জামিনের আদেশ দেন।
আরো পড়ুন: শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্বামী আটক
শনিবার মারা যাওয়া কলেজ শিক্ষিকার বড় ছেলে সালমান নাফি বলেন, ‘আমার মাকে আত্মহত্যা করার জন্য চাপ দিয়েছে ওই ছেলে (মামুন)। যার কারণে আমার মা বাধ্য হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আমি চাই আমার মায়ের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত হোক। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীকে আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করছি।’
আরো পড়ুন: শিক্ষিকার মৃত্যু: মামুনের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
খায়রুন নাহারের চাচাতো ভাই সাবের উদ্দীন ও নাঈম হাসান বলেন, বিয়ের পর ওই ছেলে (মামুন) খাইরুন নাহারকে টাকা-পয়সার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিল। টাকার জন্য অনেক সময় তাকে মারধর করতো। শুনেছি, ওই ছেলে নাকি জামিনে বের হয়েছে। আইনের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। এই মৃত্যুর একটা সুষ্ঠু তদন্ত আমরা চাই। মৃত্যুর পেছনে জড়িত সবার কঠোর বিচার চাই আমরা।
আরো পড়ুন: শ্বাসরোধে মৃত্যু হয় কলেজশিক্ষিকা খায়রুনের: চিকিৎসক
নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক সাবেক (আরএমও) সামিউল ইসলাম শান্ত বলেন, ‘শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। মরদেহের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শ্বাসরোধ হওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। তারপরও ভিসেরা রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত জানা যাবে।’
আরো পড়ুন: হাসপাতালের মর্গে সেই শিক্ষিকার মরদেহ, মেডিকেল বোর্ড গঠন
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নাটোর সদর থানার এসআই এ জে মিন্টু বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের চাচাতো ভাই সাবের উদ্দিন বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। এতে শিক্ষিকার মৃত্যুর সঙ্গে স্বামী মামুনের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে এমন ধারণা থেকে তাকে ওই মামলায় ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় মামুনকে। ঢাকার রিপোর্ট আসার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরো পড়ুন: সেই শিক্ষিকার দাফন সম্পন্ন
উল্লেখ্য, গত ১৪ আগস্ট রোববার সকাল ৭টার দিকে নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকায় চারতলার এক ভাড়া বাসা থেকে খায়রুন নাহারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে দুপুরে সিআইডির সুরতহালের পর ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে রাত ৮টার দিকে উপজেলার স্থানীয় আবু বকর সিদ্দিকী কওমী মাদরাসা মাঠে জানাজা শেষে খামার নাচকৈড় কবরস্থানে খায়রুন নাহারের দাফন সম্পন্ন হয়।
আরিফুল/ মাসুদ