ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০২ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ১৮ ১৪৩১

বন্দি থাকার অনুভূতি দিতে ‘কারাগার রেস্টুরেন্ট’ 

রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪৪, ২৩ অক্টোবর ২০২২  
বন্দি থাকার অনুভূতি দিতে ‘কারাগার রেস্টুরেন্ট’ 

জেলখানায় বন্দি জীবনের খানিকটা অনূভুতি নিতে সব বয়সের মানুষ আসছেন ‘কারাগার রেস্টুরেন্টে’। ফাঁসির মঞ্চ থেকে শুরু করে কয়েদিদের গারদ— সব কিছু খেতে খেতে দেখা যাচ্ছে এই রেস্টুরেন্টে।

অপরাধের সাজা দিতে নয়, মূলত কারাগারে থাকতে কেমন লাগে— সেই অনুভূতি দেওয়ার পরিকল্পনা থেকে ভিন্নমাত্রার রেস্টুরেন্ট করে সাড়া ফেলেছেন রংপুরের সামছুজ্জামান রিপন। 

রংপুর মহানগরীর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্কের মোড় এলাকায় এই রেস্টুরেন্টে সব সময় থাকছে ভোজন রসিকদের ভিড়। ব্যতিক্রম নাম আর ভিন্ন আদলে গড়া রেস্টুরেন্টে ভোজনের জন্যে নয়, অনেকে আসেন কারাগারে বন্দি থাকার ভঙ্গিতে ছবি তুলতেও। কারাবন্দি থেকে নিজের পছন্দের খাবার খেয়েও খুশি আগত ভোজন রসিকরা।

কারাগারে তৈরিকৃত ফাঁসির মঞ্চ ও গারদখানার মাঝখানে রয়েছে ভোজন রসিদের টেবিলে বসে খাবার সুব্যবস্থা। ভাত, পোলাও থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের মাছ ও মাংস, খিচুড়ি, বিরিয়ানি, হালিম, লুডুস ও চাইনিজ জাতীয় খাবার এই কারাগারে পাওয়া যায়। খাবারের মান আর ব্যতিক্রম পরিবেশের কারণে প্রতিদিন ভিড় করছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। কেউ খাবার খেয়ে আবার কেউ ভিন্ন পরিবেশ উপভোগ করে উদ্যোক্তার প্রশংসা করছেন।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে তিন বন্ধ মিলে রেস্টুরেন্টে বসে চাইনিজ খাচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিহাব। এ সময় শিহাব বলেন, ‘কখনো জেলাখানা দেখা হয়নি, তাই আজ এখানে আসলাম। ফাঁসির মঞ্চ থেকে শুরু করে সবকিছু দেখলাম। এখন কারাগারে বসে খাচ্ছি। ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে সত্যিকারের জেলে বসে আছি। যখন বাহিরের দরজাটা লেগে যায়, তখন নিজেকে অসহায় মনে হয়। আমার কাছে এও মনে হচ্ছে, আসলে সত্যিকারের জেল কঠিন।’

শিহাব বলেন, ‘রেস্টুরেন্টে এসে কিছুটা অসহায়ত্ব অনুভব করে আমরা তরুণ প্রজন্ম যেন অপরাধপ্রবণ না হই, সেই শিক্ষা নিতে পারি। সত্যিকারের জেলে যেন কোনো দিন না যেতে হয়।’

রেস্টুরেন্টোর মালিক সামসুজ্জামান রিপন বলেন, ‘ছোট বেলা থেকে আমি সৃষ্টিশীল। এই ব্যবসাতেও নতুন কিছু করার ইচ্ছে থেকে ভিন্ন আঙ্গিকে করার চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতে রেস্টুরেন্টের সকল স্টাফদের কয়েদি পোশাকসহ ডিজিটাইজেশন করবো। রেস্টুরেন্ট শুরুর তিন মাসের মধ্যে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভোজনপ্রিয় মানুষের কাছ থেকে সুনাম পেয়েছি। চেষ্টা করছি মানসম্মত খাবার পরিবেশন করে ক্রেতা ধরে রাখার।’

আগামীতে হাজতখানা ও ফাঁসির মঞ্চের পাশাপাশি আদালত বানানোর ইচ্ছে আছে বলে জানান সামসুজ্জামান রিপন।
 

আমিরুল/বকুল


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়