ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১২ ১৪৩১

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং’র প্রভাবে খুলনার বাঁধে ধস 

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩২, ২৪ অক্টোবর ২০২২  
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং’র প্রভাবে খুলনার বাঁধে ধস 

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ এর প্রভাবে খুলনার কয়রা উপ‌জেলার হ‌রিণ‌খোলা ও গা‌তির‌ঘে‌রীতে বাঁধে ভাঙন দেখা দি‌য়ে‌ছে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) ভোরে হঠাৎ করে কয়রার কপোতাক্ষ নদের তীরের হরিণখোলা বেড়িবাঁধ ও শিবসা নদীর তীরে গাতিরঘেরী বেড়িবাঁধে ধস শুরু হয়। এতে ফসল, ঘরবাড়ি নোনা পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ঘিরে আতঙ্ক বিরাজ করছে উপকূলীয় অঞ্চলে। ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের তীরে বসবাসকারীরা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বাঁধের যা অবস্থা, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়া ছাড়া নিস্তার নেই।

কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, হরিণখোলা বেড়িবাঁধে মারাত্মক ভাঙন দেখা দিয়েছে।

আরো পড়ুন:

কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, কয়রার হ‌রিণ‌খোলা ও গা‌তির‌ঘেরী‌র বাঁধে ভাঙন দেখা দি‌য়ে‌ছে। স্থানীয়‌দের নি‌য়ে মেরাম‌তের কাজের প্রস্তু‌তি‌ চল‌ছে। এ ছাড়া কয়রায় হোগলা, দোশহালিয়া, মদিনাবাদ লঞ্চঘাট, ঘাটাখালী, গাববুনিয়ার, আংটিহারা, ৪নং কয়রা সুতির গেট ও মঠবাড়ির পবনা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে, এলাকার বাঁধের দিকে খেয়াল রাখার জন্য। সাইক্লোন শেল্টারগুলো প্রস্তুত রাখা হয়ে‌ছে।

কয়রা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাসানুল বান্না জানান, ঘূ‌র্ণিঝ‌ড় মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ভো‌রের দি‌কে উপকূ‌লে আঘাত হান‌তে পা‌রে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) ভোর থে‌কে কয়রায় ৩০-৩৫ কি‌লো‌মিটার বে‌গে বাতাস বয়ে যাচ্ছে। মধ‌্যরাত থে‌কে বৃ‌ষ্টিপাত শুরু হ‌য়ে‌ছে। তি‌নি আরও ব‌লেন, বিদ‌্যুৎ না থাকায় রি‌পোর্ট দিতে সমস্যা হ‌চ্ছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় বেড়িবাঁধ রয়েছে মোট ১ হাজার ৯১০ কিলোমিটার। ষাটের দশকে মাটি দিয়ে তৈরি এই বেড়িবাঁধ ছিল ১৪ ফুট উঁচু ও ১৪ ফুট চওড়া। এখন এর ২৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের উচ্চতা ও চওড়া অর্ধেকও অবশিষ্ট নেই। ত‌বে স্থানীয়‌দের ভাষ‌্য,  ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের প‌রিমাপ আরও বে‌শি হবে। 

খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিশেষ কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে, তাদের যাতে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া যায়; সেই জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

২০২০ সালের ২০ মে সুপার সাইক্লোন আম্ফানের আঘাতে খুলনার কয়রা, পাইকগাছা, সাতক্ষীরার, শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতে দাকোপে ৬৫ জনের মৃত্যু হয়। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডরে কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 
 

নুরুজ্জামান/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়