পরমাণু ভবনে ধস, গাফিলতি খতিয়ে দেখা হবে: মন্ত্রী
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ঢাকার সাভারে পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের ধসে পড়া নির্মাণাধীন ভবন নির্মাণে গাফিলতির কথা স্বীকার করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে সাভারের আশুলিয়ার গনকবাড়িতে অবস্থিত পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ধসে যাওয়া ১০ তলা ভবনের ছাদ পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: পরমাণু শক্তি গবেষণা কেন্দ্রের নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে আহত ১৫
ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘যারা এই ভবন নির্মাণ কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের ব্যাপারেও আমরা দেখবো। তাদের কতটুকু গাফিলতি হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখবো। এটা মূলত ঠিকাদারের ব্যাপার, এখানে যদিও আমাদের কিছু নেই। তবুও আমরা সব খতিয়ে দেখবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এমন তিনটি কমপ্লেক্স রয়েছে। চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহে। সাধারণতো এ ধরনের উঁচু ভবনের ছাদ করতে গেলে ঢালাইয়ের জন্য নির্মিত লোহার কাঠামো ঠিকভাবে হয়েছে কিনা সেগুলো ভালোভাবে যাছাই করতে হয়। কিন্তু এখানে কিছু গাফিলতি ছিলো। উচ্চতা যখন বেশি হয় তখন দুটো উচ্চতায় ট্রপিং করে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে লোহার কাঠামো একটার ওপর আরেকটা ঠিকভাবে আছে কিনা সে বিষয়টি তারা খেয়াল করেননি। ফলে জিনিসটি স্লিপ করতে পারে। আসলে ঘটনাটি এটিই হয়েছে। এছাড়া ভবনের ছাদও ঢালাই হয়নি কাছাকাছি কিছু ভিম ঢালাই হচ্ছিল তখনই এ ঘটনাটি ঘটে। পুরোটা দেখে বুঝেছি কিছুটা তো গাফলতি আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা হলো ঠিকাদার ধসে যাওয়া অংশ সব পরিষ্কার করে নতুন করে কাজ করবে। এ ধরনের অঘটন আর যাতে না হয় সে দিকটি খেয়াল রাখতে হবে।’
কোনো তদন্ত কমিটি করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলেন তিনি বলেন, ‘এখানে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আমরা আজ এর জন্যই এখানে এসেছি। সব কিছু দেখলাম। আর আমার লোকজন হাসপাতালে গিয়ে আহতদের দেখছেন।’
ভবনটির কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ভবন। এখানে ক্যানসারের হাসপাতালসহ গবেষণা ও প্রশিক্ষণের কাজ করা হবে। আগে আমরা ক্যানসার হলে শুধু পরীক্ষা করে দিতাম, কিন্তু এখানে সেই রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হবে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার যে টাকা খরচ করে আমরা বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করায় সেটা অনেক অংশে কমিয়ে আনতে পারবো এই হাসপাতালের মাধ্যমে।’
পরিদর্শনের সময় মন্ত্রীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল ইসলাম এনডিসি, পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহা পরিচালক দেবাশীষ পাল, পরমাণু শক্তি কমিশনের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুঞ্জুরুল হাসানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
পরমাণু শক্তি কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ‘এটি পেট সিটি ও সাইক্লোট্রন স্থাপন প্রকল্প। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরমাণু শক্তি কমিশন এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। পরমাণু প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্যানসার রোগ নির্ণয় ও নিরাময়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের ভবন এটি।
শুক্রবার (১০ মার্চ) বিকেলে ভবনটির ১০ তলা নির্মাণাধীন ছাদ ধসে যায়। এতে একজন গুরুতরসহ প্রায় ১৫ জন শ্রমিক আহত হন।
সাব্বির/ মাসুদ