‘ব্রয়লার মুরগি আর গরিবের নেই’
নীলফামারী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
নীলফামারীর একটি বাজারে মুরগি বিক্রির দোকান
‘গরু, ছাগল ও সোনালি মুরগির মাংস খাওয়া বাদ দিয়েছি অনেক আগেই। ব্রয়লার মুরগির মাংস ছিল আমাদের গরিবের মাংস। ১৩০- ১৪০ টাকা কেজি দরে আগে ব্রয়লার মুরগির মাংস কিনতাম। সরকার রমজান উপলক্ষে ১৯৫ টাকা কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেওয়ায় কিছুটা খুশি হয়েছিলাম। মনে করেছিলাম সন্তানদের ব্রয়লারের মাংস হলেও সেহরিতে খাওয়াতে পারবো। তবে বাস্তবে চিত্র ভিন্ন। বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি দরে। ব্রয়লার মুরগি এখন আর গরিবের নেই।’
শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকালে আক্ষেপ ও ক্ষোভ নিয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভ্যান চালক জহুরুল ইসলাম।
জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘সামর্থ্য না থাকায় ছোট ছোট রিটা মাছ কিনে সেহরি করেছি। আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১০০ টাকার ভাড়াও মারতে পারি নাই। ইফতারের খাবারের টাকাও উপার্জন হয় নাই।’
পবিত্র রমজান মাসে কাঁচা বাজারসহ নিত্যপন্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তবে অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা।
নীলফামারীর বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া এখানকার বাজারে দেশি মুরগি ৬০০ টাকা, সোনালী মুরগি ৩৫০, গরুর মাংস ৬৫০ ও ছাগলের মাংস ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সবজি কিনতে আসা দিনমজুর আমিনার রহমান বলেন, ‘রমজান মাস আসলেই আমাদের দেশে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। দিনে আমি ৩০০ হতে ৪০০ টাকা আয় করি। এই টাকা দিয়ে কোনো রকম চাল, ডাল, আলু কেনা যায়। মাংস কেনার কথা কল্পনাতেও আনি না।’
মুরগি বিক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘২২৩ টাকা কেজি দরে কিনে ২৫০ টাকায় বিক্রি করছি ব্রয়লার মুরগি। পাইকারি বেশি দাম কিনলে, আমাদের বেশি দামে বিক্রি করা ছাড়া উপায় থাকে না।’
অপর মুরগি বিক্রেতা মাইকেল ইসলাম বলেন, ‘চার হাত পরিবর্তনের পর আমরা খুচরা ব্যবসায়ীরা মুরগি পাই। তাই আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়।’
নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং চলছে। কেউ বেশি দামে পণ্য বিক্রি করলে তাকে ভ্র্যাম্যমাণ আদালতের আওতায় আনা হবে।’
সিথুন/ মাসুদ