পানির স্তর নেমে শুকিয়ে যাচ্ছে ধানিজমি, বিপদে কৃষক
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার ফলে কৃষকের প্রায় ৮০ বিঘা ইরি ধানের জমি শুকিয়ে গেছে। ওইসব জমির কৃষকরা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএর) কাছে বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন করে সাড়ে ৪ মাসেও কোনো সাড়া পাননি। ফলে তারা ইরি ধানের আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের মোল্লান মাঠ এলাকায় ২১ জন কৃষকের ৮০ বিঘা ইরি ধানের জমি রয়েছে। এইসব ধানি জমিতে তারা শ্যালো মেশিনের (সেচযন্ত্র) মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থা করে থাকেন। কিন্তু পানির স্তর নেমে যাওয়ার ফলে ওই শ্যালো মেশিন দিয়ে ধানি জমিগুলোতে আর সেচ দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। এমন অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বাদল আলী নামে এক কৃষক গত ১৬ মার্চ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি আবেদন করেন।
বাদল আলী তার আবেদন পত্রে বলেছেন- রামকৃষ্ণপুর জেএল নং ১৪২, দাগ নং-৩৭১১ খতিয়ান নং ৫৮১ মোল্লান মাঠে ডিজেল চালিত একটি সেচযন্ত্র আছে। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে গত বছরের ২১ নভেম্বর বিএমডিএ অফিসে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য অনুমতির জন্য আবেদন করি। এখনও তার ছাড়পত্র মিলেনি। বিদ্যুৎ সংযোগ না পেলে কৃষকের ইরি ধান মরে নষ্ট হয়ে যাবে।
পানির স্তর নেমে যাওয়ার ফলে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি উঠছেনা, ইরি ধানের জমিতে সেচ দিতে পারছে না কৃষক
ক্ষতিগ্রস্ত আকবর আলী নামে আরেক কৃষক জানান, বিএমডিএর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনের সময় আমাদের জানানো হয়, আপনারা ধান চাষ করেন। দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। তাদের মৌখিক আশ্বাসে ধান লাগিয়ে দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমতি দিচ্ছে না। এতে তার জমিতে লাগানো পাঁচ বিঘা জমির সব ধান মরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
রেজাউল করিম নামে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বলেন, শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে জমিতে সেচ দেওয়া হবে। পানি উঠবে কোনো সমস্যা হবেনা। শ্যালো মেশিন মালিকের এমন আশ্বাসের বাণী শুনে আমি প্রায় ৩ বিঘা জমিতে ইরির আবাদ করেছি। এখন পর্যন্ত প্রতি বিঘায় খরচ পড়েছে ১৫-১৭ হাজার টাকা। পুরো মাঠ শুকিয়ে ফেটে গেছে। পানি না পেলে সব ধান রোদে শুকিয়ে মরে যাবে। আর কিছুদিন বাদেই ধানের শীষ ফোটার সম্ভাবনা রয়েছিলো, কিন্তু এই আশাও করতে পারছিনা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএমডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা মূলত সেচ লাইসেন্স দিয়ে থাকি।কৃষকদের এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের মিটিং হয়েছে। আশা করছি শিগগির তার লাইসেন্স পেয়ে যাবে।
শিয়াম/টিপু