সিসিক নির্বাচন: আরিফের প্রার্থিতা নিয়ে ‘ধোঁয়াশা’
নূর আহমদ, সিলেট || রাইজিংবিডি.কম
দরজায় কড়া নাড়ছে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন। চারদিকে চলছে তুমুল আলোচনা। আ.লীগ প্রার্থী নির্বাচনের কাজ ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছেন। সাত মনোনয়ন-প্রত্যাশী এরই মধ্যে দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন। কিন্তু সাবেক দুইবারের মেয়র বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুল হক চৌধুরী বরাবরের মতো আলোচনা জিইয়ে রেখেছেন। প্রার্থী হওয়া নিয়ে এখনো ধোঁয়াশায় রেখেছেন নগরবাসীকে। মাঠ পর্যায়ে তুমুল জনপ্রিয় বর্তমানে লন্ডনে অবস্থানরত এই নেতা দল ও জনগণ- দুই কূল রক্ষায় মরিয়া। শেষ পর্যন্ত যেকোনও একটি বেছে নিতে হবে তাকে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র দাবি করেছে, যুক্তরাজ্য সফররত সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সোমবার (১০ এপ্রিল) সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে। এই সাক্ষাতের জন্য তিনি ছুটে গিয়েছিল যুক্তরাজ্যে। সর্বশেষ লন্ডনের অভিজাত কিংস্টন এলাকার একটি ভেন্যুতে তাদের এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। লন্ডন সময় বিকাল ৪টার দিকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক শেষে অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মেয়র আরিফ নিজেই বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তিনি নির্বাচন করবেন না। তবে দলের নিজের পদ ও সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে দলীয় প্রধানের সাথে আলাপ করেছেন বলেও জানা গেছে। তবে সরাসরি কোনও আশ্বাস পাননি আরিফুল হক চৌধুরী। ভবিষ্যতের আশ্বাস নিয়েই ফিরেছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
অপরদিকে, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীর অংশগ্রহণ নিয়ে ধোঁয়াশাও কাটছে না এখনই। দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা করে শেষ পর্যন্ত যেকোনও মূল্যে নির্বাচন করতে পারেন আরিফুল হক। যদিও এই ব্যাপারে আরিফুল হক চৌধুরীর কাছ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তিনি বলেছেন, দেশে ফিরে নির্বাচন নিয়ে তার অবস্থান পরিষ্কার করবেন।
মেয়র আরিফ যুক্তরাজ্য হয়ে ইতালির মিলান ঘুরে গত ৫ দিন ধরে লন্ডনে অবস্থান করেন। গতকাল ৯ এপ্রিল লন্ডন থেকে ফ্লাইট করার কথা থাকলেও বৈঠকের জন্য শেষ মুহূর্তে ফ্লাইটটি পরিবর্তন করেন আরিফুল হক। এখন পর্যন্ত তিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন। আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট সিটি কর্পোরেশনের টানা দুই বারের মেয়র।
সিলেট পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা করা হয় ২০০২ সালে। প্রথম নির্বাচন হয় চারদলীয় জোট সরকার আমলে। এতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছিলেন বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। তিনি পৌরসভা থাকাকালে চেয়ারম্যান থেকে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। পরে ২০০৮ সালে কারাগারে থাকা অবস্থায় দ্বিতীয়বার বিজয়ী হন কামরান। তৃতীয় নির্বাচন হয় ২০১৩ সালের ১৫ জুন। এ নির্বাচনে কামরানের সঙ্গে মেয়র পদে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। এতে আরিফুল হক পেয়েছিলেন ১ লাখ ৭ হাজার ৩৩০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন আহমদ কামরান পেয়েছিলেন ৭২ হাজার ২৩০ ভোট।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদরউদ্দিন কামরানের চেয়ে ৬ হাজার ১৯৬ ভোট বেশি পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বহুল প্রতীক্ষিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা/এনএইচ