১০ টাকায় ঈদ আনন্দ
পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে মার্কেটে গিয়ে পরিবারের জন্য ঈদের নতুন জামা কাপড় কেনার স্বপ্ন থাকলেও সাধ্য নেই সমাজের দুস্থ ও অসহায় মানুষদের। তাই তাদের কাছে বাহারী পোশাক কেনা স্বপ্নই থেকে যায়। তবে, এসব মানুষদের সেই স্বপ্ন কিছুটা পূরণে ভূমিকা রেখেছে আবুল কাশেম ফাউন্ডেশন। মাত্র ১০ টাকায় দরিদ্র অসহায় মানুষদের নতুন জামা কাপড় কেনার ব্যবস্থা করে দিয়েছে ফাউন্ডেশনটি।
বড়দের পোশাক থেকে শুরু করে ছোটদের শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি ও মেয়েদের বিভিন্ন রকমের পোশাক ১০ টাকার বিনিময়ে স্বল্প আয়ের মানুষদের কেনার সুযোগ পাচ্ছেন ফাউন্ডেশনটি থেকে। তাদের এমন উদ্যোগে হাসি ফুটেছে অনেক দরিদ্র পরিবারের মুখে।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সুজানগর পৌর সদরের কাশেম প্লাজায় ‘১০ টাকার ঈদ আনন্দ’ শ্লোগানে এই ঈদ বাজারের উদ্বোধন করেন ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা শাহীনুজ্জামান শাহীন।
আয়োজকরা জানান, মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এ উদ্যোগ ঈদের আগের দিন পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে পোশাক শেষ হওয়া পর্যন্ত চলবে এই কার্যক্রম।
স্বল্প আয়ের মানুষ ১০ টাকা দিয়ে তাদের পছন্দমত ঈদের জামা কাপড় কিনতে পেরে বেশ উচ্ছসিত। কাপড় কিনতে আসা গৃহবধূ ছালমা খাতুন বলেন, ‘আমাগারে তো মার্কেটে যায়া নতুন কাপুড় কিনা সম্ভব লায়। এহেনে ১০ টেকা দিয়ে নতুন কাপুর পায়া খুব ভাল লাইগলো।’
অপর গৃহবধূ আলেয়া খাতুন বলেন, ‘১০ টেকা দিয়ে মিয়ের জন্যি একখান জামা আর ১০ টেকা দিয়ে আমার শুয়ামীর জন্যি একখান লুঙ্গি কিনলেম।’
১০ বছরের শিশু মীম জানায়, ‘শুনলেম এখেনে ১০ টেকা দিয়ে নতুন জামা দিবি, তাই আইছি। দশ টেকা দিয়ে একখান নতুন জামা কিনে খুব খুশি।’
ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সানজিদা ইয়াসমিন টুম্পা বলেন, ঈদ আনন্দ সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে এবং স্বল্প আয়ের মানুষের ১০ টাকার মাধ্যমে নতুন পোশাক দিতে এমন আয়োজন করা হয়েছে। ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করার পাশাপাশি সমাজের অসহায় গবির ও দুস্থ মানুষকে বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে আসছে আমাদের সংগঠনটি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির একটি অংশ ঈদ ও পূজায় নতুন পোশাক কিনতে পারেন না। তাদের কথা চিন্তা করে আবুল কাশেম ফাউন্ডেশন যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটি প্রশংসনীয়। ১০ টাকা দিয়ে গরিব মানুষরা সহজেই পোশাক কিনতে পারছেন। সমাজের বিত্তবানদের এমন উদ্যোগে এগিয়ে আসা উচিত।
ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, ঈদ আসলে অবস্থা সম্পন্ন মানুষরা মার্কেটে গিয়ে পছন্দমতো নতুন পোশাক কিনতে পারেন। কিন্তু দরিদ্র মানুষগুলো তা পারে না। তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না মার্কেটে গিয়ে ৮০০ বা এক হাজার দিয়ে নতুন পোশাক কেনা। তাদের কথা চিন্তা করে বিগত তিন বছর ধরে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আরেকটি কথা হলো, ১০ টাকা দিয়ে নতুন পোশাক দেওয়ার উদ্দেশ্যে, যিনি নিচ্ছেন তিনি যেন মনে না করেন ফ্রি নিচ্ছেন। তিনি যেন মনে করেন তিনি টাকা দিয়েই পোশাকটি কিনে নিচ্ছেন।
শাহীন/ মাসুদ