সিসিক নির্বাচন: ধরপাকড়ের অভিযোগ, আতঙ্কে বিএনপি কর্মীরা
সিলেট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
সিলেটে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ বলে অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েকদিনে দলটির অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশ এ ধরপাকড় শুরু করেছে বলে দাবি দলটির নেতাদের।
বিএনপির নেতারা সিলেট পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার না করার দাবি জানিয়ে এসেছেন।
এদিকে, সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র ও বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীও তার কর্মী সমর্থকদের গ্রেপ্তারের অভিযোগ করেছেন।
সিলেট নগরের চৌহাট্টা এলাকায় ছাত্রদলের মিছিল থেকে ২ মে বিকেলে ৮ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন মঙ্গলবার রাতে ৮ জনের নাম উল্লেখ ও নাম না জানা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করে কতোয়ালি থানার শাহজালাল (র.) তদন্ত কেন্দ্রের উপ পরিদর্শক (ফাঁড়ি ইনচার্জ) কাজী জামাল উদ্দিন মামলা করেন। এতে পুলিশের ওপর হামলা এবং সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগ আনা হয়। ওই মামলায় আরও কয়েকজনকে পরে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। নগরীর ৪২টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ওই মামলায় আটক দেখানো হচ্ছে নেতাদের। এছাড়া মিছিল থেকে আটক ওই ৮ নেতাকর্মীর এক দিনের রিমান্ডও মঞ্জুর করেন আদালত।
অন্যদিকে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির নেতাকর্মীদের ‘ধরপাকড় ও হয়রানি’ বন্ধ করার দাবি জানিয়ে গত সোমবার বিকেলে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. ইলিয়াস শরীফের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় বিএনপির নেতারা পুলিশ কমিশনারকে জানান, সিটি নির্বাচন সামনে রেখে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ বিভিন্ন মামলায় আসামি করেছে। এছাড়াও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বাড়ি গিয়ে পুলিশ হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেন তারা। বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, সেখানে কেন তাদের নেতাকমীর্দের হয়রানি বাড়াবাড়ি বলে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বলেছেন পুলিশ কমিশনারকে।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও আসামি পক্ষের আইনজীবী এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, সিলেটে বিভিন্ন মামলায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৫০ নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এরমধ্যে ২ মে গ্রেপ্তার হওয়া ৮ জনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আমরা এর বিরোধিতা করে বলেছি, মামলার বিবরণের যে তথ্য দেওয়া হয়েছে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটি গায়েবি মামলা। এ ধরনের মামলা রিমান্ড দেওয়ার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছি।
এদিকে, আগামী ২০ মে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে অবস্থান পরিষ্কার করবেন বলে জানিয়েছেন বর্তমান সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বর্তমান পুলিশ ও প্রশাসনের ব্যাপক সমালোচনা করে বক্তব্য দিচ্ছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, তার কর্মী সমর্থকদের আটক করে পুলিশ পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে চালান দিচ্ছে। কেউ তার সঙ্গে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিলেও তাকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই হয়রানি বন্ধ করতে হবে। আগামী ২০ মে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার করবেন বলেও জানান তিনি।
সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. ইলিয়াস শরীফ বলেন, বিএনপি নেতারা এসেছিলেন। তাদের কথা শুনেছি। বিষয়টি আমাদের নজরে থাকবে বলেও তাদেরকে জানিয়েছি।
নূর আহমদ/ মাসুদ