ঢাকা     রোববার   ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৮ ১৪৩১

‘মোখা’র অজুহাতে শতবর্ষী গাছে কোপ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৭, ১৫ মে ২০২৩   আপডেট: ২৩:০৪, ১৫ মে ২০২৩
‘মোখা’র অজুহাতে শতবর্ষী গাছে কোপ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক বিভাগের পরিদর্শন বাংলোর প্রায় শতবর্ষের তিনটি বিশালাকৃতির গাছ টেন্ডার ছাড়াই কাটার অভিযোগ উঠেছে। প্রকৌশলীর দাবি, ঘূর্ণিঝড় মোখা থেকে বাঁচতেই গাছগুলো কাটা হয়েছে।

জানা গেছে, গত শনিবার (১৩ মে) সরকারি নিয়মের বাইরে নির্বাহী প্রকৌশলীর একক সিদ্ধান্তে গাছগুলো কেটে নেন রেজাউল নামের এক ঠিকাদার।

শহরের দক্ষিণ মৌড়াইল এলাকায় সড়ক বিভাগের পরিদর্শন বাংলো রয়েছে। সেখানে স্টাফদের বাসা ও বিভিন্ন প্রকার যান রাখা হয়ে থাকে। এই অফিসের ভেতরেই একটি পুকুরের চারপাশে অনেক পুরাতন একটি তুলা গাছ ও দুইটি শীল কড়ই গাছ ছিল। শনিবার সকাল থেকে এই তিনটি গাছ কাটা শুরু করে আরমান নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে কাঠুরেরা। শুধুমাত্র সড়ক বিভাগে নির্বাহী কর্মকর্তার লিখিত অনুমতিতে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়। এক্ষেত্রে জেলা পরিবেশ ও বন নিয়ন্ত্রণ কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়নি। কোনও প্রকার বিজ্ঞপ্তি বা টেন্ডারও আহ্বান করা হয়নি। মূল্য নির্ধারণ করতে জেলা বন বিভাগকে কোনও প্রকার চিঠি দেওয়া হয়নি।

জানতে চাইলে ঠিকাদার রেজাউল বলেন, ‘গাছগুলো অনুমতি নিয়ে কাটছি। ঢাকা বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়েছি। সব সড়ক অফিস জানে’।

বন বিভাগের অফিস সূত্রে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী সরকারি যে কোনও স্থাপনা বা অফিসের গাছ কাটতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে অনুমোদন নিতে হবে। এরপর বন বিভাগে আবেদন করতে হয়। সেই আবেদন সরেজমিন যাচাই-বাছাই করে গাছের মূল্য নির্ধারণ করে জেলা পরিবেশ ও বন নিয়ন্ত্রণ কমিটির কাছে পাঠাবে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে পরিবেশ ও বন নিয়ন্ত্রণ কমিটি গাছ কাটার অনুমতি দেবে। তারপর গাছগুলো বিক্রির নিলামের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে।

বন বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসএফএনটিসি’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগের নিজস্ব অফিসে গাছ লাগালেও স্থাপনাটি সরকারি। যে কোনও সরকারি স্থাপনা থেকে গাছ কাটতে নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। সব সরকারি অফিসে একই নিয়ম। কিন্তু তাদের অফিস থেকে আমাদের কাছে কোনও প্রকার আবেদন করেনি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ গাছগুলো টেন্ডার ছাড়াই কাটা হয়েছে বলে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, গাছগুলো অনেক পুরনো। যে কোনও সময় গাছ পড়ে মানুষের ঘরবাড়িসহ জীবনের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। এজন্য ঘূর্ণিঝড় (মোখা) থেকে বাঁচতেই গাছগুলো কাটা হয়েছে। 

বন বিভাগের অনুমতির নিয়েছেন কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, অনুমতি নেওয়া হয়নি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম শেখ বলেন, আপনার (প্রতিবেদক) মাধ্যমেই বিষয়টি জানতে পেরেছি। সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে হলে অবশ্যই নিয়মের ভেতরেই কাটতে হবে। এছাড়া গাছ কেউ কাটতে পারবে না। ইউএনও বিষয়টি খবর নেবেন বলে জানান।

মাইনুদ্দীন/এনএইচ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়