ঢাকা     রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৯ ১৪৩১

অপচয়কৃত পানি সংরক্ষণ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুদের দৃষ্টান্ত 

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৮, ২২ মে ২০২৩   আপডেট: ১৮:০৯, ২২ মে ২০২৩
অপচয়কৃত পানি সংরক্ষণ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুদের দৃষ্টান্ত 

খরা মৌসুমে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও রায়গঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভুগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে পানি সংকট সৃষ্টি হয়ে থাকে।  ফলে অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি ওঠে না। আবার অনেকের বাড়িতে টিউরওয়েল নেই। ফলে এ এলাকায় পানি সংকট রয়েছে।

এ সংকট মোকাবিলায় ফলেগ্লোবাল ফান্ড ফর চিল্ড্রেন (জিএফসি) ইউএসএ এর সহযোগিতায় স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট ফর ডিসাইড ভ্যাটিগেট পিপুল (ডিডিপি) তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের শিংপাড়া গ্রামে জয়ফুল লার্নিং স্কুল নামে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

এই প্রকল্পের আওতায় শিশুদের নানাভাবে আনন্দময় শিক্ষাদান করা হয়। এই স্কুলের সকল নৃগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের ছোট থেকে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন:

এ ছাড়া কীভাবে জলবায়ুর অভিযোজন করা যায়, সেই বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাদের পানির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার পাশাপশি পানি সংরক্ষণের জন্য তাদের আগাম প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রত্যেক শিশুর বাড়ির টিউবওয়েলের মুখের নিচে একটি করে রিসাইকেলিং ম্যাটেরিয়ালসের তৈরি বালতি রাখা হয়েছে। সারা দিন কল থেকে একাধিকবার পানি নেওয়ার সময় প্রচুর পানি অপচয় হয়। এ অপচয় রোধে অনবরত পড়া সেই পানি ওই বালতিতে সংরক্ষণ করে পরে গৃহস্থালীর নানা কাজে ও সবজি বাগানে ব্যবহার করা হয়।

এ বিষয়ে জয়ফুল লার্নিং স্কুলের শিক্ষার্থী ভক্ত (৮) বলেন, আমরা এখন আর পানি অপচয় করিনা। প্রতিদিন আমাদের ৩-৪ বালতি করে পানি জমে। ওই পানি আমরা পরে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করি।

অপর শিক্ষার্থী সুষমা (১০) বলে, ‘পরিবেশ যাতে ঠান্ডা থাকে এবং ঝড় থেকে যাতে আমাদের বাড়িঘর রক্ষা পায়, সেই জন্য স্কুল থেকে আমাদের গাছ ও বিভিন্ন শাক-সবজির বীজ দেওয়া হয়। আমরা এগুলো লাগিয়ে নিজেরাই যত্ন করি।’ 

এ বিষয়ে ডিডিপির নির্বাহী পরিচালক কাজী সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে শিশুদের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন সবজি বীজ শিশুদের মাঝে বিতরণ করেছি। এ ছাড়া বৃক্ষরোপণের অংশ হিসেবে ফলজগাছ বিতরণ করেছি। আমরা শিশুদের শিক্ষার পাশাপাশি পরিবেশ বান্ধব মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছি। প্রতিটি শিশুর বাড়িতে প্রতিদিন পানি জমানোর পাত্রে প্রায় ১০০ লিটারের মতো পানি জমে। জমাকৃত এ পানি তারা প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করে থাকে। জলবায়ুর এ বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় এখানে শিশুদের পাশাপাশি আমাদের যুব ফোরাম স্থানীয় সরকারের সঙ্গে এ্যাডভোকেসি করে থাকে।’

এ বিষয়ে মাধাইনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিলুর রহমান হাবীব বলেন, ‘আমি সত্যিই অবাক হয়েছি এত সুন্দর উদ্যোগ দেখে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে আমরা প্রতিনিয়ত নানা পরিবেশগত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। আমার ইউনিয়নের অনেক জায়গায় পানির লেয়ার অনেক নিচে নেমে গেছে। ফলে পানির সদ্বব্যবহার
জরুরি কাজ। যা এখানকার শিশুরা ছোটবেলা থেকে চর্চা করে পানি অপচয় রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’
 

রাসেল/বকুল 


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়