ঢাকা     সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৮ ১৪৩১

সার আত্মসাৎ: বিএডিসির সহকারী ভান্ডার কর্মকর্তার ১৪ বছরের জেল

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪৫, ৪ জুলাই ২০২৩  
সার আত্মসাৎ: বিএডিসির সহকারী ভান্ডার কর্মকর্তার ১৪ বছরের জেল

যশোরে সরকারি সার আত্মসাতের অপরাধে বিএডিসির সাবেক সহকারী ভান্ডার কর্মকর্তা আজগর আলীকে পৃথক ধারায় ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আত্মসাতকৃত সারের মূল্য ৩ কোটি ৭৪ লাখ ৮১ হাজার ১৬ টাকা ৩২ পয়সা রাষ্ট্রের অনুকূলে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আসামিকে। 

এদিকে, মামলার অপর দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) যশোরের স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. সিরাজুল ইসলাম। 

আরো পড়ুন:

সাজাপ্রাপ্ত আজগর আলী যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার আরাজী সিলিমপুরের আরশাদ আলী মোল্লার ছেলে। 

খালাস প্রাপ্তরা হলেন- যশোর বিএডিসি’র তৎকালীন উপ-সহকারী পরিচালক বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত মো. ফাহাদ আল-মামুন ও অভয়নগর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামের মো. মেছের আলী মল্লিকের ছেলে সার ডিলার মো. মমিন উদ্দিন। 

মামলার বিবরণে জানা গেছে, যশোরের চাঁচড়াস্থ বিএডিসি গুদামে সহকারী ভান্ডার কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন আজগর আলী। তিনি ২০১১ সালের ২১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই গুদামে কর্মরত থাকাকালে নাম না জানা ব্যক্তিদের সহায়তায় ৩২০ মেট্রিক টন এমওপি সার আত্মসাৎ করেন। যার তৎকালীন বাজার মূল্য ৭৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৬০ টাকা। এ ঘটনায় বিএডিসি’র যুগ্ম পরিচালক (সার) রতন কুমার মন্ডল ২০১৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। 

মামলাটি তদন্ত করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. ওয়াজেদ আলী গাজী। তদন্তকালে এজাহারভুক্ত আসামি আজগর আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া জবানবন্দিতে উঠে আসে অপর দুই জনের জড়িত থাকার কথা। এছাড়া, তদন্তকালে টিএসপি, এমওপি এবং ডিএপি সারসহ মোট ৮৪৪ দশমিক ৮০ মেট্রিক টন আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য ৩ কোটি ৭৪ লাখ ৮১ হাজার ১৬ টাকা ৩২ পয়সা। দুদক কর্মকর্তা ওয়াজেদ আলী গাজী উপরে উল্লেখিত তিনজনসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন। তাদের মধ্যে আসামি আজগর আলীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ৪২০ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৪ মাসের কারাদণ্ড দেন। এছাড়াও, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দুই বছরের কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন। আসামিকে প্রদত্ত সব ধারার দণ্ড একত্রে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। 

এছাড়া আসামিকে আত্মসাতকৃত সারের ৩ কোটি ৭৪ লাখ ৮১ হাজার ১৬ টাকা ৩২ পয়সা রাষ্ট্রের অনুকূলে জমা প্রদানের জন্য আদেশ দেওয়া হয়। তদন্তে উঠে আসা আরেক চতুর্থ আসামি সার ব্যবসায়ী এম এ রাশেদ মারা যাওয়ায় তাকে এ মামলা থেকে আগেই অব্যাহতি দেওয়া হয়। 

রিটন/ মাসুদ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়