টানা বৃষ্টিতে ডুবছে চট্টগ্রাম নগরী, পাহাড় ধসের শঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম
টানা বৃষ্টিতে নগরীর প্রায় সব এলাকাতেই কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পানি জমেছে
টানা বৃষ্টির ফলে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অধিকাংশ এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার (৫ আগস্ট) রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ডুবে যাচ্ছে চট্টগ্রাম শহর। পানি জমেছে ফ্লাইওভারেও।
রোববার (৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর বহদ্দার হাট, চক বাজার, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেইট, বাকলিয়া, প্রবর্তক মোড়, জিইসি, ওয়াসা, আগ্রাবাদসহ নগরীর প্রায় সব এলাকাতেই কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পানি। সকালে বাসা থেকে বের হয়ে অফিসগামী যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
নগরীর মুরাদপুর এলাকা থেকে আমিরুল ইসলাম নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, সকালে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হয়ে মুরাদপুর এলাকায় আধা ঘণ্টা ধরে আটকে রয়েছি। এখানে প্রধান সড়কে কোমর সমান পানি। কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। পানি ডিঙিয়ে অফিস যাওয়ার কোনো রাস্তা মিলছে না।
নগরীর আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা আজমত উল্লাহ জানান, টানা বৃষ্টিতে পুরো এলাকা ডুবে রয়েছে।
এদিকে, টানা বৃষ্টির ফলে ভয়াবহ পাহাড় ধসের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই অবস্থায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের নিরাপদ সরিয়ে নিতে কাজ করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিট্রেট ও এনডিসি জানান, গত দুই দিন ধরে চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। মানুষের জানমাল রক্ষার্থে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান চট্টগ্রাম মহানগরে ৬টি সার্কেলের মাধ্যমে ভাগ করে পাহাড় রক্ষায় ও মানুষের জানমাল রক্ষায় জেলা প্রশাসনের কয়েকটি টিম কাজ করছে। প্রতিদিন মাইকিং থেকে শুরু করে মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সরে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, পাহাড় ধসে যাতে মানুষের আর প্রাণ না দিতে হয় সেজন্যে কাজ করা হচ্ছে। মাইকিং থেকে শুরু করে সকলকে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রতিদিন জেলা প্রশাসনের টিম কাজ করছে। শনিবার রাতে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে ২৫০ পরিবারকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনো খাবার থেকে শুরু করে প্রতিবেলার খাবারের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। চট্টগ্রামের সকল পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত পরিবারকে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করার জন্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রেজাউল করিম/ইভা