ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

ভূমধ্যসাগরে ট্রলারডুবি: নরসিংদীর ৭ যুবক নিখোঁজ

নরসিংদী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৭, ১২ আগস্ট ২০২৩   আপডেট: ০৯:৫২, ১২ আগস্ট ২০২৩
ভূমধ্যসাগরে ট্রলারডুবি: নরসিংদীর ৭ যুবক নিখোঁজ

ট্রলারডুবিতে নিখোঁজদের মধ্যে ৬ জন (ছবি: সংগৃৃহীত)

দালালের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে সমুদ্র পথে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে ট্রলারডুবির ঘটনায় নরসিংদীর সাত যুবক নিখোঁজ রয়েছেন।

শনিবার (১২ আগস্ট) নিখোঁজ যুবকের স্বজনরা সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা প্রত্যেকেই নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বাসিন্দা।

নিখোঁজ সাত যুবক হলেন, বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের কাঙ্গালিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মোখলেছুর রহমান (২০) একই এলাকার মৃত হাছেন আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন, কামাল হেসেন (৩৪), ভাটের চর গ্রামের হাসান উদ্দিনের ছেলে মাসুদ রানা(২২), দুলালকান্দি গ্রামের হারুন রশীদ রশিদের ছেলে মনির হোসেন (২২), একই এলাকার আ. মোতালিব মিয়ার ছেলে রবিউল (৩৩), টান লক্ষ্মীপুর গ্রামের মহরম আলীর ছেলে স্বাধীন মিয়া (২০) ও নিলক্ষিয়া গ্রামের আমান মিয়া (২১)।

এই সাত জনই ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা খরচ করে দুলাল কান্দি গ্রামের লাল মিয়া ছেলে জাকিন হোসেন এবং নুর কাসেমের স্ত্রী শাহিনুর (জাকিরের ফুফু) এর মাধ্যমে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন বলে স্বজনরা জানান।

নিখোঁজ কামাল মিয়ার ছোট ভাই জামাল মিয়া বলেন, ৫-৬ মাস আগে আমার ভাইকে ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে ইতালির উদ্দেশ্য প্রথমে লিবিয়া নিয়ে যায়, বেশ কিছুদিন গেম ঘরে রেখে গত বুধবার রাত ৮টায় ডেঙ্গিতে করে ইতালির পথে যাত্রা করে, কিন্তু ৪০ মিনিট পর ডেঙ্গি ডুবে যায়। জাকিরের তত্ত্বাবধানে যাওয়া লোকদের মধ‌্যে ১২ জন ফিরে আসলেও সাত জন নিখোঁজ রয়ে যায়। এ তথ্য জাকির হোসেন স্থানীয় মিলন মেম্বারের মাধ্যমে আমাদের জানায়।

নিখোঁজ রবিউলের ভাই ইব্রাহিম বলেন, আমার ভাই আট মাস আগে লিবিয়া গিয়েছিল ভৈরবের দালাল রবিউল্লার মাধ্যমে। কিন্তু সেখানে ভাইকে বৈধ কোনো কাগজ করে দেয়নি। দুলাল কান্দির দালাল জাকির হোসেন ইতালি যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে ৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলো। এখন আমার ভাই নিখোঁজ। আমরা আমার ভাইয়ের সন্ধান চাই।

রবিউলের স্ত্রী সাথী আক্তার বলেন, আজ থেকে ১৭ দিন আগে আমার স্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছিল, সে বলেছিলো, আমার জন্য দোয়া করো। আমরা এখন গেম ঘরে আছি, আগামী বুধবারে ডেঙ্গিতে তুলবে, এ কথা বলে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। তারপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি। 

এ বিষয়ে দুলালকান্দি গ্রামের বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিলন মেম্বার বলেন, আমি খবর পেয়ে জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। ফোন দিলে মোবাইল অন্য একজন রিসিভ করে আমাকে জানায়, এ ঘটনায় ১২ জন উদ্ধার হলে ও সাত জনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। 

এদিকে, জাকির হোসেন ও শাহিনুরের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে তালা দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন।

বেলাব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তানভীর আহমেদ বলেন, বিষয়টি শুনেছি তবে এখনও কোনো অভিযোগ আসেনি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা জান্নাত তাহেরা বলেন, নিখোঁজের সংবাদ লোক মুখে শুনেছি। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। নিখোঁজদের বিষয় জানতে প্রবাসী ও বৈদেশি কর্মসংস্থানে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।

হৃদয় এস সরকার/ইভা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ