ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩১

চোখের আলো নেই, মনের আলোয় পরীক্ষা দিচ্ছেন তারা

শাহীনুর রহমান, পাবনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৯, ২১ আগস্ট ২০২৩   আপডেট: ১৮:১০, ২১ আগস্ট ২০২৩
চোখের আলো নেই, মনের আলোয় পরীক্ষা দিচ্ছেন তারা

হতদরিদ্র সাত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থী শ্রুতি লেখকের সহায়তায় পাবনার মানব কল্যাণ ট্রাস্টের সার্বিক তত্বাবধানে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। চোখে আলো না থাকলেও মনের আলো ও শক্তিকে কাজে লাগিয়ে পড়ালেখা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা তাদের। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভবিষ্যতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে সমাজের অবহেলিত সব বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের শিক্ষিত করে তোলার পাশাপাশি সমাজে নানা ক্ষেত্রে অবদান রাখতে চান তারা। 

এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সাত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেন- গাজীপুরের রজিম উদ্দিনের ছেলে রোমান মিয়া, পাবনার সাঁথিয়ার ওয়াজেদ আলীর ছেলে শোভন মোল্লা, পাবনা সদরের দোগাছির চাঁদ আলীর ছেলে আল আমিন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাবলাবনা গ্রামের আনছার আলীর ছেলে মোশাররফ হোসেন, সাঁথিয়ার আব্দুস সাত্তার মোল্লার ছেলে আব্দুস সবুর, সদরের চরতারাপুরের ইছাহাক প্রামানিকের ছেলে শাকিল প্রামানিক ও জয়পুরহাটের ফরিদ হোসেনের ছেলে রিয়াদ হোসেন। তারা পাবনার দোগাছি স্কুল এন্ড কলেজ, পাবনা সরকারি কলেজ, শহিদ এম মনসুর আলী কলেজ ও পাবনা ইসলামিয়া কলেজ থেকে এবারের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। 

শ্রুতি লেখকদের সাহায্যে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সাত শিক্ষার্থী জানান, তারা পাবনার সিংগাস্থ মানব কল্যাণ ট্রাস্টেই খাকেন তারা। এখন থেকেই তাদের পড়ালেখার খরচ বহন করা হয়। এই ট্রাস্টের মাধ্যমেই বিনা খরচে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগগ্রহণ করেছেন তারা। তাদের ইচ্ছে ভবিষ্যতে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে সমাজের অবহেলিত সব বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের শিক্ষিত করে তোলার পাশাপাশি সমাজে নানা ক্ষেত্রে অবদান রাখা।    

আরো পড়ুন:

মানব কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার জন্য ব্রেইল পদ্ধতি প্রয়োজন। অথচ দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ সুযোগ নেই। পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন শ্রুতি লেখকের। দরিদ্র এব প্রতিবন্ধীদের পক্ষে শ্রুতি লেখকদের সম্মানী দেওয়া তো দূরের কথা পড়ালেখা করার নুন্যতম আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করার সক্ষমতা নেই। তারপরও থেমে থাকেনি তারা। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে মানব কল্যাণ ট্রাস্ট। সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজন আর্থিক সহায়তা। 

ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল হোসেন বলেন, এই ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের এখানে রেখে পড়ালেখা করানো হচ্ছে। প্রতি বছর এসএসসি, এইচএসসি, অনার্স, মাস্টার্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন আমাদের শিক্ষার্থীরা। তারা সুনামের সঙ্গে সাফল্যজনক ফলাফল করছে। তাদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে প্রতিষ্ঠান সারা দেশের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের সর্বোৎকৃষ্ট শিক্ষালয় হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। 

মাসুদ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়