ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

যশোর ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪৬, ২৬ আগস্ট ২০২৩   আপডেট: ২২:২৭, ২৬ আগস্ট ২০২৩
যশোর ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

যশোর জেলা ছাত্রলীগের বিশেষ প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত না থাকায় ১১ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শোকজ পাওয়া নেতাদের ৩ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব স্বশরীরে দিতে বলা হয়েছে। 

তবে, ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা অভিযোগ করে বলেন, যশোর জেলা ছাত্রলীগ প্রেস রিলিস নির্ভর। জেলার সভাপতি ও সম্পাদকের সঙ্গে সাংগঠনিক কমিটির নেতাদের সমন্বয় নেই। তারা দুইজন একক সিন্ধান্তে প্রেস রিলিস কমিটি দেন আবার তুলেও নেন। সভাপতি ও সম্পাদকের স্বেচ্ছাচারিতায় সাংগঠনিক কোনো কার্যক্রম নেই।

কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়া ১১ নেতা হলেন– জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ইমরান হোসেন, শাহাদাৎ হোসেন রনি হাওলাদার, কায়েস আহমেদ রিমু, আব্দুর রউফ পিন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিফাতুজ্জামান রিফাত, আসাদুজ্জামান আসাদ, আশিকুর রহমান হৃদয়, মাসুদ হাসান কৌশিক, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, রাকিবুল আলম, ফাহমিদ হুদা বিজয়। 

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী ১ সেপ্টেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ছাত্রসমাবেশ করবে। এ উপলক্ষে গত শুক্রবার বিকেলে যশোর শহরের গাড়িখানাস্থ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে জেলা ছাত্রলীগ। এতে জেলার আট উপজেলাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কলেজের ২৮টি ইউনিটের মধ্যে বেশির ভাগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন না জেলা ছাত্রলীগের ১১ জন পদধারী নেতা। ফলে সেই ১১ জনকে নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। 

শোকজ পাওয়া ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ, ২০২১ সালের ৫ জুলাই থেকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক পল্লব পদে পদে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে নিয়েছেন সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত। কমিটি গঠন থেকে শুরু করে সংগঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সব প্রক্রিয়ায় কমিটিকে যুক্ত করার পরিবর্তে তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন দু’জন মিলে। সংগঠন পরিচালনায় তাদের চরম স্বেচ্ছাচারিতায় ২৩ সদস্যের কমিটিকে একসঙ্গে করতে পারেনি এই সভাপতি-সম্পাদক। তাদের সাংগঠনিক অক্ষমতায় ইতোমধ্যে অনেকগুলো উপগ্রুপে বিভক্ত হয়েছে সংগঠন। ফলে সংগঠনে বিরাজ করছে চরম বিশৃঙ্খলা। আবার অনেকেই কাঙ্খিত পদে বসতে না পারায় পদ ব্যবহারও করেন না।

এই বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, বর্ধিত সভার কোনো চিঠি পায়নি। জেলার সভাপতি ও সম্পাদকের সঙ্গে সাংগঠনিক কমিটির নেতাদের সমন্বয় নেই। তাদের দুইজন একক সিন্ধান্তে প্রেস রিলিস কমিটি দেন আবার তুলেও নেন। সভাপতি ও সম্পাদকের স্বেচ্ছাচারিতায় সাংগঠনিক কোনো কার্যক্রম নেই। এই দুইজন যে কয়েকটা কমিটি দিয়েছেন সেগুলোর ক্ষেত্রে তারা সাংগঠনিক কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেননি। অছাত্র জামায়াত-বিএনপি পরিবারের লোকদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন তারা। কোনো সাংগঠনিক কাজে তারা কাউকে ডাকেন না। তারপরেও শুনেছিলাম বর্ধিত সভা সম্পর্কে। তবে যায়নি তাদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে। 

তিনি আরও বলেন, শোকজ করেছে। শোকজের জবাব দেবো কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। জেলার সভাপতি-সম্পাদক কাছে জবাব দেবো না।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান হৃদয় বলেন, প্রেস রিলিস ফেজবুকে ঘুরছে, ওটা দেখেছি। জেলা ছাত্রলীগ তো প্রেস রিলিস নির্ভর। ওনারা তো কমিটির অন্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন না।  সভাপতি সম্পাদক দুজনে আলোচনা করে কমিটি দেওয়া থেকে শুরু করে যা কার্যক্রম করেন সেটা রাতের আধারে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে করেন। এখন শোকজ করেছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে আমার জবাব দেবো। 

অপর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, অসুস্থ ছিলাম। বর্ধিত সভার বিষয়টি জানি না। তাছাড়া ওইদিন সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে বের হতে না পারার  কারণে যেতে পারেনি। 

এই বিষয়ে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের মুঠোফোনে কয়েক দফা ফোন দিলেও দুই জনের কেউই ফোন রিসিভ করেননি। ফলে এই বিষয়ে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

তবে জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত তরুণ বলেন, বিশেষ প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত না থাকায় ১১ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। তাদের সবাই লিখিত আকারে সভাপতি ও সম্পাদক কাছে স্বশরীরে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

রিটন/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়