ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করায় অপমান, লজ্জায় আ.লীগ নেতার আত্মহত্যা

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সানা উল্লাহ (৬০) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঋণে জর্জরিত হয়ে তিনি মানসিক চাপে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি পরিবারের।

সোমবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এর আগে, সকালে গাছের সঙ্গে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখে থানায় খবর দেন স্বজনেরা।

সানা উল্লাহ উপজেলার বামনী ইউনিয়নের পূর্ব সাগরদী গ্রামের মৃত আব্দুল হক কাজীর ছেলে এবং একই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সানা উল্লাহ বাড়ির পাশে চা দোকান করে সংসার চালাতেন। তিনি পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দুই শতক জমির ওপর ঘর করে স্ত্রী, তিন ছেলে এবং দুই মেয়ে নিয়ে বসবাস করতেন। 

সানা উল্লাহর বড় ভাই আনসার উল্লাহ ও ছেলে হৃদয় জানান, সানা উল্লাহ আশা, টিএমএস, পল্লীমঙ্গল ও রিক নামে চারটি এনজিও সংস্থা থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু অভাবের কারণে তিনি ঠিকমতো ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারতেন না।

এতে প্রায় সময় এনজিওর মাঠ কর্মীরা বাড়িতে এসে টাকার জন্য বসে থাকতেন। কোনো সময় এনজিও কর্মীরা গভীর রাত পর্যন্ত বাড়িতে অবস্থান নিতেন এবং অপমানজনক কথা বলতেন।

রোববার (২৭ আগস্ট) রাত ১২টা পর্যন্ত আশা এবং পল্লী মঙ্গলের দুই কর্মী টাকার জন্য বাড়িতে অবস্থান নেন। যাবার সময় তারা ঘরের বেড়া খুলে নিয়ে যাবার হুমকি দেন। এতে সানা উল্লাহ অপমান বোধ করেন। পরে সোমবার সকালে তার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে এবং অপমান সইতে না পেরে লজ্জায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি তাদের।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, সোমবার সকালে বাড়ির পুকুর পাড় থেকে সানা উল্লাহর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।