ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

দেড় ঘণ্টার পথ যেতে লাগবে ২০ মিনিট

রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১৫, ৩০ আগস্ট ২০২৩   আপডেট: ২১:১৯, ৩০ আগস্ট ২০২৩
দেড় ঘণ্টার পথ যেতে লাগবে ২০ মিনিট

চট্টগ্রাম মহানগরীর মূল শহর থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দুরত্ব মাত্র মাত্র ১৮ কিলোমিটার। কিন্তু এই দুরত্ব অতিক্রম করতে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। বন্দর ইপিজেড কেন্দ্রিক যানজটের কারণে কখনো কখনো এই দুরত্ব অতিক্রমে ২/৩ ঘণ্টাও লেগে যায়। বছরের পর বছরের এই দুর্ভোগ আর সময়ের অপচয় থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের কোটি মানুষ। আগামী নভেম্বর মাসে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের দীর্ঘতম এবং নান্দনিক এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এই এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহর থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছান যাবে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যেই।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গৃহীত প্রকল্পে নগরীর লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত চট্টগ্রাম ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৬ দশমিক ৫ মিটার প্রশস্ত চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ থাকলেও নানা জটিলতায় কাজ এগুতে না পারায় দুই দফা সময় বৃদ্ধি করে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ের দুই পাশে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে ১৪টি র‌্যাম্প বসানোর কাজ অবশিষ্ট রেখে আগামী নভেম্বরে এই প্রকল্পের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। 

র‌্যাম্প ছাড়া উদ্বোধন হলেও চট্টগ্রাম নগরী থেকে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যেই চট্টগ্রাম বিমানবন্দর অথবা পতেঙ্গা পৌঁছাতে পারবে। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিতর দিয়ে পারাপার হওয়া যানবাহনও এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে চলাচল করতে পারবে। তবে র‌্যাম্প চালু না হওয়ায় নগরীর লালখান বাজার থেকে যাত্রা শুরু করে পতেঙ্গার আগে শহরের অন্য কোনো প্রান্তে যানবাহন উঠা-নামা করতে পারবে না। 

চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সেপ্রেসওয়ে নির্মাণের প্রকল্প পরিচালক মো. মাহফুজুর রহমান জানান, প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী নভেম্বরে মূল এক্সপ্রেসওয়ে চালুর লক্ষ্য নিয়ে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা কাজ চলছে। ইতোমধ্যে এই এক্সপ্রেসওয়ের নাম চট্টগ্রামের সাবেক প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে নামকরণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ৪৫৮তম বোর্ড সভায় এ ব্যাপারে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। 

প্রকল্প পরিচালক জানান, মূল এক্সপ্রেসওয়ের ১৬ কিলোমিটারে পিলার নির্মাণ ও গার্ডার বসানোর কাজ প্রায় শতভাগ শেষ। পতেঙ্গা থেকে নগরীর সল্টগোলা ক্রসিং পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের এক্সপ্রেসওয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত। নগরীর চৌমুহনী, দেওয়ান হাট থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত গার্ডার বসানোর কাজ চলছে। কয়েকদিন টানা বৃষ্টিপাত হওয়ায় গার্ডার বসানোর কাজ কিছুটা ধীরগতিতে এগুচ্ছে। তবে নভেম্বরের আগেই সব গার্ডার বসানো শেষ করে যানবাহন চলাচলের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। 

এদিকে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে যুক্ত হবে ১৪টি র‌্যাম্প। এর মধ্যে টাইগারপাসে দুটি, আগ্রাবাদে চারটি, ফকিরহাটে একটি, নিমতলায় দুটি, সিইপিজেডে দুটি এবং কেইপিজেড এলাকায় দুটি র‌্যাম্প বসানো হবে। মুল এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ও উদ্বোধনের পর র‌্যাম্প বসানোর কাজ শুরু হবে বলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম নগরী থেকে পতেঙ্গা ও বিমানবন্দর পর্যন্ত যাতায়াত হবে দ্রুততম ও নির্ঝঞ্ঝাট। লাখ লাখ মানুষ বছরের পর বছরের চরম দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে। এছাড়া কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেলের মধ্য দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনও এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরীতে গমনাগম করতে পারবে।
 

রেজাউল/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়