ঢাকা     সোমবার   ০৮ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২৪ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে উত্যক্ত করায় স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৩, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩  
টাঙ্গাইলে উত্যক্ত করায় স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

স্কুলছাত্রী জুই অভিযুক্ত বখাটে বাধন

টাঙ্গাইলের বাসাইলে উত্যক্ত করায় আলিফা খানম জুই নামের এক স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। 

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে তার মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় শুধু বখাটেই নয়, শিক্ষকদেরও দোষ রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। 

এর আগে বুধবার বিকেলে বাসাইল উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের মটরা সাহাপাড়া এলাকায় এ আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটে।

আলিফা খানম জুই ওই গ্রামের আসাদুজ্জামানের মেয়ে। সে বাসাইল উপজেলার লৌহজং উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

উত্যক্তকারী অভিযুক্ত বখাটের নাম বাধন ওরফে পিচ্চি বাধন। পিচ্চি বাধন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের বীরপুশিয়া নয়াপাড়া গ্রামের প্রবাসী কামরুল ইসলামের ছেলে।

জানা যায়, উপজেলার লৌহজং উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আলিফা খানম জুইকে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার মাঝে দীর্ঘদিন ধরে বাধন উত্যক্ত করে আসছিলো। সম্প্রতি উত্যক্তের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। মাঝে মধ্যে ওই ছাত্রীকে এসিড দিয়ে মুখ ঝলসে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে বুধবার বিকেলে (৩০ আগস্ট) বাধনসহ তার পরিবার এবং ওই ছাত্রীসহ তার পরিবারকে ডেকে নেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সেখানে বখাটে বাধনকে শাসিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ওই ছাত্রীও বেশ অপমানিত হয়। এরপর বিদ্যালয় থেকে বাড়িতে ফেরার পরপরই ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে মেয়েটি আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে বাসাইল থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। 

শিক্ষার্থী জুইয়ের মা রূপা বেগম বলেন, ‘আমি স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় থাকি। আমার মেয়ে গ্রামে তার দাদা-দাদির সঙ্গে থেকে লৌহজং উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতো। দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েককে বখাটে বাধন জ্বালাতন করে আসছিলো। বুধবার বিদ্যালয়ে সালিশে আমার মেয়ের ওপরেও দোষ চাপানো হয়। সালিশ থেকে ফিরে মনের কষ্টে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করে। আমি বখাটে বাধনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরজু জমাদার বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা শিক্ষক ও দুই পরিবারের লোকজন নিয়ে বসেছিলাম। সেখানে বাধনকে শাসিয়ে দেওয়া হয়। তারপরও মেয়েটি কেনো আত্মহত্যা করলো আমরা বুঝতে পারছি না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’

এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকেলে বখাটে বাধনের বাড়িতে সরেজমিনে গেলে তার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি।

বাসাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মতিউর রহমান খান বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই বেদনাদায়ক। খবর পেয়ে মেয়েটির বাড়ি ও বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। প্রাথমিক তদন্তে বখাটে বাধনের উত্যক্তের বিষয়টি উঠে এসেছে।’

বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে লাশটি ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় শুধু বখাটে বাধন নয়, শিক্ষকদেরও দোষ রয়েছে।’

কাওছার/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়