ইমিগ্রেশন চালুর অপেক্ষা
রামগড় স্থলবন্দর সম্ভাবনার নতুন দ্বার
রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম
রামগড় স্থলবন্দরে সব ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে
চট্টগ্রাম বন্দর ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলকে কেন্দ্র করে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি সহজতর করতে শিগগিরই চালু হতে যাচ্ছে রামগড় স্থলবন্দর। এ বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এখন ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালুর জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন দ্রুত ও সহজতর করতে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশস্ত করা হচ্ছে বারইয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক।
পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির একটি উপজেলা রামগড়। এই উপজেলায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে স্থাপিত হয়েছে রামগড় স্থলবন্দর। ফেনী নদীর ওপর বাংলাদেশ-ভারত প্রথম মৈত্রী সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। এ সেতু ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে খাগড়াছড়ির রামগড়কে সংযুক্ত করেছে। সেতুর পাশাপাশি বাংলাদেশ-ভারতের নাগরিকদের দুই দেশে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে রামগড় স্থলবন্দর। এ বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতে সাতটি রাজ্যের সংযোগ ও যাতায়াত সহজ ও দ্রুততর হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খাগড়াছড়ির রামগড় স্থলবন্দরের তত্ত্বাবধায়ক (পোর্ট সুপারিনটেনডেন্ট) এস এস মাসুম বিল্লাহ জানিয়েছেন, রামগড় স্থলবন্দরে সব ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। বন্দরটি এখন শুধু ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালুর অপেক্ষায় আছে। ইমিগ্রেশন চালু হলে প্রথম পর্যায়ে উভয় দেশের নাগরিকরা এই বন্দর দিয়ে গমনাগমন করতে পারবেন। পরবর্তী পর্যায়ে শুরু হবে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।
রামগড় স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু করতে প্রশস্ত করা করা হচ্ছে মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক। ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক প্রশস্তকরণ শুরু হয় চলতি বছরের জুন মাসে। প্রথম পর্যায়ে সড়কের বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনীয় সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপে সড়ক প্রশস্তকরণ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা।
রামগড় স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠার অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম বলেছেন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে রামগড় স্থলবন্দরের গুরুত্ব অপরিসীম। চট্টগ্রাম বন্দর ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের নিকটবর্তী হওয়ায় দেশের অর্থনৈতিক বিবেচনায় রামগড় স্থলবন্দর বেনাপোলের চেয়েও অধিক গুরুত্বপূর্ণ। রামগড় স্থলবন্দর চালু হলে বাণিজ্য আরও প্রসারিত হবে ভারতের সাতটি রাজ্যসহ নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে। চট্টগ্রাম থেকে বেনাপোলে যেতে অনেক সময় প্রয়োজন হয়। রামগড় বন্দর চালু হলে কম সময়ে ও কম খরচে আমদানি-রপ্তানি করা সম্ভব হবে। মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল, চট্টগ্রাম বন্দর ও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের সুফল পেতে রামগড় স্থলবন্দর ভালো ভূমিকা রাখবে।
/রফিক/