‌‘ডেঙ্গু উপশমে ডাবের পানির উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকা নেই’

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. মো. সবিজুর রহমান বলেছেন, ‌‘ডেঙ্গু জ্বর উপশমের ক্ষেত্রে ডাবের পানি পান করার উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকা নেই। এ বছর দেশে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। সবাই সচেতন না হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। এ রোগের জন্য দায়ী এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধ করতে হবে।’ 

সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) খুলনা জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত খুলনা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সেপ্টেম্বর মাসের সভায় তিনি এসব কথা বলেন। খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন সভায় সভাপতিত্ব করেন। 

খুলনা নগরীর ডেঙ্গু পরিস্থিতি উল্লেখ করে সিভিল সার্জন ডা. সবিজুর রহমান বলেন, খুলনা শহরে নির্মাণাধীন ভবনগুলোয় পানি জমে থাকতে দেখা যাচ্ছে। জমে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশ বিস্তার করতে পারে। 

জেলার সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কামড়ানো রোগীদের চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিভেনম এক সপ্তাহের মাধ্যে পৌঁছে যাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান বলেন, পুলিশ মানুষের জন্য কাজ করে, মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে। সাধারণ মানুষ অপরাধ ও অপরাধীর তথ্য পুলিশকে জানালে সমাজ থেকে অপরাধমূলক কার্মকাণ্ড দূর করতে পুলিশ আরও কার্যকর অবদান রাখতে পারবে। আসন্ন দুর্গাপূজা ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর চেষ্টা প্রতিরোধে পুলিশ সজাগ রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে যে কোনো ধরণের গুজব ও অপপ্রচার বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এলাকায় নতুন কাউকে দেখলে তার কার্মকাণ্ড ও গতিবিধির ওপর প্রতিবেশীদের নজর রাখা প্রয়োজন।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (সদর দপ্তর) সোনালী সেন সভায় জানান, মেট্রোপলিটন এলাকায় মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চলছে। সম্প্রতি মাদকদ্রব্য আটকের পরিমাণ বেড়েছে। সব ধরণের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে মেট্রোপলিটন এলাকায় পুলিশের স্থায়ী চেকপোস্ট ও অভিযান চলমান রয়েছে। দুর্গাপূজার সময় অপরাধ প্রবণতা ও যানজট নিয়ন্ত্রণে মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ পরিকল্পনা থাকবে। এছাড়া অনলাইন জুয়া বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, মাদক সংশ্লিষ্ট মামলার বিচার ত্বরান্বিত করতে যথাসময়ে সাক্ষ্য-প্রমাণ আদালতে হাজিরে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সমাজে মাদকের বিস্তার রোধে পারিবরিক মূল্যবোধ ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। আসন্ন দুর্গাপূজার সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধে সব পূজা মণ্ডপে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপনের ওপর জোর দিতে হবে। পূজা মণ্ডপের বিদ্যুৎ সংযোগ নিরাপদ হতে হবে, যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মীর আলিফ রেজা সভায় বিগত মাসে খুলনা জেলা ও মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলে ধরেন।

খুলনা জেলা অধিক্ষেত্রে বিগত আগস্ট মাসে ১৬৯টি মামলা দায়ের হয়েছে, যা বিগত জুলাই মাসে দায়ের হওয়া মামলা সংখ্যার চেয়ে ৩৪টি কম। খুলনা মহানগরী অধিক্ষেত্রে আগস্ট মাসে ২০৪টি মামলা দায়ের হয়েছে, যা গত জুলাই মাসে দায়ের হওয়া মামলার চেয়ে ২৮টি বেশি।

সভায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।