রংপুর চিড়িয়াখানায় এলো রোমিও-জুলিয়েট
রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
একমাত্র বাঘিনী ‘শাওন’ মারা যাওয়ার দীর্ঘ ২১ মাস পর আবারও বাঘ আনা হয়েছে রংপুর চিড়িয়াখানায়। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা থেকে দুই বছর বয়সী রোমিও ও জুলিয়েট নামের বাঘ দুটি মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে এসে পৌঁছায় এই চিড়িয়াখানায়। এদিকে নতুন বাঘ আসার খবরে আজ বিকেল থেকে চিড়িয়াখানাটিতে ভিড় করতে দেখা যায় দর্শনার্থীসহ উৎসুক মানুষজনকে।
বাঘ আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর আম্বার আলী তালুকদার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ বিকেল ৩টার দিকে লাল কাপড়ে মোড়ানো লোহার দুটি খাঁচায় করে রোমিও-জুলিয়েটকে রংপুর চিড়িয়াখানায় আনা হয়। এসময় ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বরণ করা হয় বাঘ দুটিতে। পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রংপুর চিড়িয়াখানায় রোমিও-জুলিয়েটের জন্মদিন উপলক্ষ্যে খাঁচার সামনে কেক কাটা হয়।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, সরকারি এই চিড়িয়াখানায় একটি মাত্র বাঘিনী ছিল। ২০০৩ সালের ৩০ জুন ‘শাওন’ নামের ওই বাঘিনীর জন্ম হয়েছিল ঢাকার মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায়। গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি বাঘিনীটির মৃত্যু হয়। সে সময় তার বয়স হয়েছিল ১৮ বছর ৭ মাস। ২০১০ সাল থেকে রংপুর চিড়িয়াখানায় তাকে সঙ্গীহীনভাবে খাঁচাবন্দি রাখা হলেও শেষ পর্যন্ত তাকে সুস্থ-সবলই দেখা গেছে। মৃত্যুর আগে কোনো রোগেও বাঘটি আক্রান্ত ছিল না। বার্ধক্যের কারণে শাওনের মৃত্যু হয়েছিল। বাঘ সাধারণত ১৫ থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত বাঁচে।
এদিকে নতুন বাঘ জোড়ার পরিচর্যা, খাদ্য সরবরাহসহ খাঁচা সংস্কার করেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি দর্শনার্থীদের আকর্ষণ বাড়াতে শুরু হয়েছে প্রচার-প্রচারণা।
বাঘের খাদ্য সরবরাহকারী রমজান আলী জানান, দীর্ঘদিন ধরে খাঁচাটি শূন্য ছিল। আজ এক জোড়া বাঘে পূর্ণতা পেল রংপুর চিড়িয়াখানা। আমরা খুবই আনন্দিত। বাঘ দুটির জন্য মাংস সরবরাহসহ অন্যান্য সবকিছুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের দিক থেকে বাঘের পরিচর্যায় কোনো ঘাটতি থাকবে না।
চিড়িয়াখানার ইজারাদার হজরত আলী বলেন, দীর্ঘদিন বাঘ শুন্য ছিলো চিড়িয়াখানাটি। এতে দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক কমে যায়। ফলে আয়েও কম হচ্ছিল চিড়িয়াখানায়। এবার বাঘ যুক্ত হওয়ায় আশা করছি দর্শনার্থীর সংকট কেটে যাবে।
চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর আম্বার আলী তালুকদার জানান, গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি চিড়িয়াখানার একমাত্র বাঘিনী ‘শাওন’ মারা যায়। এরপর থেকেই বাঘ শূন্য ছিল রংপুর চিড়িয়াখানা। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করেছি একজোড়া বাঘ আনার জন্য। অবশেষে আজ চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা থেকে বাঘ বহনকারী গাড়িটি এসে পৌঁছেছে। এখন দর্শনার্থী বাড়ছে। বাঘের খাঁচার সামনেই শিশু-কিশোররা বেশি ভিড় করছেন।
প্রসঙ্গত, রংপুর নগরীর হনুমানতলা এলাকায় ১৯৮৯ সালে রংপুর চিড়িয়াখানাটি নির্মাণ করা হয়। দর্শনার্থীদের জন্য ১৯৯২ সালে খুলে দেওয়া হয় এটি। প্রায় ২২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই চিড়িয়াখানাটিতে ৩৩ প্রজাতির ২৬০টি প্রাণী রয়েছে।
আমিরুল/ মাসুদ