ঢাকা     শনিবার   ২৯ জুন ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৫ ১৪৩১

মুরাদনগরে ফসলি জমিতে ড্রেজার দিয়ে চলছে বালু উত্তোলন

রুবেল মজুমদার, কুমিল্লা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৩, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩  
মুরাদনগরে ফসলি জমিতে ড্রেজার দিয়ে চলছে বালু উত্তোলন

কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় ফসলি জমিতে নিষিদ্ধ বরিং ড্রেজার দিয়ে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোনো রকম সরকারি ইজারা ছাড়াই প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি করে প্রায় কয়েক মাস ধরে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বালু তোলার কাজ করছেন বলে দাবি করেছেন স্থানীয় লোকজন। 

জমির মালিকদের অভিযোগ, উপজেলার ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের ছালিয়াকান্দি ও ডুমুরিয়া গ্রামে দিন-রাত চলছে অন্যের ফসলি জমি থেকে জোর করে বরিং ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন। সেই বালু দিয়ে পাশের তিতাস উপজেলার একটি সরকারি খাল ভরাট করা হচ্ছে। ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের শিকারীপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল মান্নান মেম্বারের ছেলে মো. ডালিম ও একই ইউনিয়নের দক্ষিণ ছালিয়াকান্দি গ্রামের লতিফ মেম্বারের ছেলে হারুন মুন্সির নেতৃত্বে এক ডজন ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন হচ্ছে। সমতল ফসলি জমির তলদেশ থেকে বালু উত্তোলনের ফলে ফসলি জমি দেবে যাওয়াসহ আশপাশের পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।  

গত বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মুরাদনগর উপজেলার ছালিয়াকান্দি এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার ফসলি জমিতে পাঁচটি ড্রেজার মেশিন বসানো। এর প্রতিটি মেশিনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে একেকটি বাল্কহেড। প্রতিটি বোট ১২/১৩ জন লোক পাহাড়া দিচ্ছেন। এসব ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে জমি থেকে তোলা হচ্ছে বালু। সেই বালু বাল্ডহেডের মাধ্যমে পাশের একটি সরকারি খাল ভরাট করছেন ডালিম ও হারুন মিয়া। এ সময় সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি দেখে সাময়িক সময়ের জন্য বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিনগুলো বন্ধ করে দেন তারা।  

জমির মালিক হাজী খুরশীদ, মাছ ব্যাপারী আলী, মনিরুল, চবদর আলী জানান, যে জমি থেকে বালু তোলা হচ্ছে সেই জমিসহ আশপাশের সমস্ত জমি তাদের। জমিতে এক মাস আগে থেকে স্থানীয় প্রভাবশালী ডালিম ও হারুন জোর করে বারিং ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলা শুরু করেন। এ বিষয়ে মুরাদনগর নির্বাহী অফিসারকে মৌখিকভাবে অভিযোগ দিলেও কোনো সুফল মিলেনি। বরং প্রভাবশালীরা নানা হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। 

অভিযুক্ত হারুন মুন্সি বলেন, আমি মানবাধিকার অধিকার সংগঠনের সদস্য। সবাইকে খরচ দিয়ে আমি ব্যবসা করি। ‘আপনারা লেখে আমগো খেটে আঘাত করেন না।’

অপর অভিযুক্ত মোহাম্মদ ডালিমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দীন ভূঞা জনী বলেন, ড্রেজার বন্ধে আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করছি। মুরাদনগরের প্রতিটি ইউনিয়নের আমাদের অভিযান চলছে। ড্রেজার দেখামাত্রই আমরা জব্দ করছি। আমাদের এই অভিযান অব্যহত থাকবে। কে বা কারা সরকারি খাল দখল করছে, এটা নিয়ম বহির্ভূত। আমরা খোঁজ নেব। সেখানে আমার নায়েবকে পাঠাবো। এই বিষয়ে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, বরিং ড্রেজার দিয়ে ভূগর্ভস্থ থেকে বালু উত্তোলন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আমি মুরাদনগরের ইউএনওকে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে অবৈধ ড্রেজার মালিক ও বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়