ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

ছিনতাইকারীর হামলা, ১৬ দিন পর শিক্ষার্থীর মৃত্যু

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৩, ৩ অক্টোবর ২০২৩   আপডেট: ১৩:১৮, ৩ অক্টোবর ২০২৩
ছিনতাইকারীর হামলা, ১৬ দিন পর শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছিনতাইকারীর হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী নিশাদ আকরাম (২৪)। ১৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা তিনি গেছেন। 

গত ১৭ সেপ্টেম্বর ছিনতাইকারীর হামলায় রিকশা থেকে পড়ে মাথার খুলি ফেটে গিয়েছিলো তার। ঘটনার পর থেকে তিনি অচেতন অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন।

নিশাদ অকরামের গ্রামের বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায়। তার বাবা একজন কৃষক। নিশাদ রাজশাহী কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। 

রামেক হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল নিশাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভর্তির পর থেকেই লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল নিশাদকে। আজ (মঙ্গলবার) ভোরে তিনি মারা গেছেন।

ঘটনার পরদিন নিশাদের এক বান্ধবী জানান, গত ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি ও নিশাদ এক অসুস্থ বান্ধবীকে হাসপাতালে রেখে রিকশায় করে আসছিলেন। তারা যখন নগরীর রাজারহাতা এলাকা পার হচ্ছিলেন তখন ছিনতাইকারীরা এসে নিশাদকে আঘাত করে। নিশাদ রিকশা থেকে পড়ে যাওয়ার পর রিকশাওয়ালা ভয়ে আরও দ্রুত গতিতে রিকশা চলাচ্ছিলেন। এ জন্য তিনি নামতে পারছিলেন না। অনেক দূরে যাওয়ার পরে তিনি চিৎকার করলে সকালে মসজিদে নামাজ পড়ে বের হওয়া লোকজন এগিয়ে এলে রিকশাওয়ালা রিকশা থামান। তারপর তিনি নিশাদের কাছে গিয়ে দেখেন তিনি অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। তাঁর মানি ব্যাগ, মোবাইল ফোন আর হাতঘড়ি নেই। এরপর তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

হামলার ঘটনায় তার চাচাতো ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে ঘটনার দিনই মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ মো. সেলিম (৫০) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে। তার বাড়ি নগরীর পাঠানপাড়া এলাকায়। পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। সেলিম এই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। সেলিমের নামে আগে থেকেই আটটি মামলা ছিল। সে পেশাদার ছিনতাইকারী।

মঙ্গলবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নিশাদের মরদেহ রামেকের মর্গে নেওয়া হয়। রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ মোহা. আব্দুল খালেক সেখানেই ছিলেন। তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে প্রায় এক লাখ শিক্ষার্থীর বসবাস। নানা প্রয়োজনে তারা যে কোন সময় রাস্তায় বের হন। এ সময় মাঝে মাঝেই তারা ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। ইদানিং ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে। এটি কাম্য নয়। ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে একজন শিক্ষার্থী মারা যাবেন-এটা মেনে নেওয়া যায় না। এটি মেনে নেওয়ার মতো না। এটি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, ‘হামলা ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় যে মামলাটি হয়েছিল, সেটিই এখন হত্যা মামলায় রূপ নেবে। গ্রেপ্তার সেলিম জানিয়েছে, তারা দুজনে মিলে এই হামলাটা করেছে। ইতোমধ্যে সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সময় নিশাদের সঙ্গে তার যে বান্ধবী ছিলেন তিনি জেলখানায় গিয়ে আসামিকে শনাক্ত করেছেন। হামলার সঙ্গে জড়িত অন্যজনকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্ত শেষে নিশাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

কেয়া/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়