ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে কক্সবাজার

তারেকুর রহমান, কক্সবাজার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৭, ৬ অক্টোবর ২০২৩  
স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে কক্সবাজার

ফাইল ফটো

দেশের ছয় জেলায় নতুন ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এই তালিকায় রয়েছে পর্যটন শহর কক্সবাজারের নামও। এর মধ্য, দিয়ে স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের শহর।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর এ বিষয়ে সুপারিশ পাঠিয়েছে ইউজিসি। জানা গেছে, ইউজিসির কাছে নয় জেলায় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব যায়। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে তারা ছয় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে।

পর্যটন শহর খ্যাত কক্সবাজারে একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ এবং একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নেই। তাই, দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি জানানো হচ্ছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক জেলায় একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠান।

ইউজিসির সুপারিশে কক্সবাজারের প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, সমুদ্রবিজ্ঞান, দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা এবং মৎস্যবিজ্ঞান বিষয় রাখার জন্য অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

কক্সবাজারে বর্তমানে ২৪টি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে, ১০-১২টি কলেজে নামেমাত্র বিষয়ে অনার্স (সম্মান) ও ডিগ্রী কোর্স চালু থাকলেও পূর্ণাঙ্গ বিষয় নিয়ে অনার্স-মাস্টার্স চালু নেই। এছাড়া, অনার্স ও মাস্টার্স সমমানের ১৬টি মাদ্রাসা রয়েছে।

কলেজভিত্তিক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এবং প্রাইভেট এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে নিয়ে যাওয়া নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি কক্সবাজারে একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার। অবশেষে কক্সবাজারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

কক্সবাজার সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ফজলুল করিম বলেন, কক্সবাজারবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, জেলায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় করার। শুনেছিলাম কক্সবাজার সরকারি কলেজকে পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করবে। কিন্তু জাতীয় রাজস্বে কক্সবাজারের ভূমিকা অনেক বেশি। তাই এখানে সম্পূর্ণ নতুন রূপে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা জরুরি।

তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এমন অঞ্চলে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা আমাদের ন্যায্য ও প্রাণের দাবি ছিল। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা প্রচেষ্টায় পর্যটন শহরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হতে যাচ্ছে। এমন যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।

শিক্ষাবিদ এমএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে কক্সবাজারের মানুষের দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। এটি আমাদের সকলের জন্য একটি সুখবর। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। তবে এটি কোন জায়গায় স্থাপন হবে তা নিয়ে মানুষের মাঝে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। আমি মনে করি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহরের সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন জায়গায় স্থাপন করতে হবে। শহরের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন রেখে এ ধরণের বড় কিছু স্থাপন করলে তা যাতায়াতসহ বিভিন্ন অসুবিধার সৃষ্টি হতে পারে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়টি শহরের সঙ্গে সংযোগ থাকার মতো জায়গায় স্থাপন করলে ভালো হবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে ৫৪টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়া, অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১১৩টি।

কেআই

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়