ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

রাজশাহী বিভাগে ১৪৯২ জনের নিয়ন্ত্রণে মাদকের কারবার

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১৭, ৮ অক্টোবর ২০২৩   আপডেট: ১৯:১৯, ৮ অক্টোবর ২০২৩
রাজশাহী বিভাগে ১৪৯২ জনের নিয়ন্ত্রণে মাদকের কারবার

আমজাদ হোসেন (৩৮) আর ইসমাইল হোসেনকে (৪৪) ১৫০ কেজি গাঁজাসহ সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল গত ১১ জুন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তারা। কিছুদিনের মধ্যে জামিনে বের হয়ে তারা আবার জড়িয়েছেন একই কারবারে। রোববার (৮ অক্টোবর) ভোররাতে রাজশাহীর পুঠিয়ায় ৩৬ কেজি গাঁজাসহ একই টিমের কাছে ধরা পড়েছেন এই দুজন।

আমজাদ ও ইসমাইলের সঙ্গে আনিসুর রহমান (৪৪) নামের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের তিনজনেরই বাড়ি কুড়িগ্রাম। তারা কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে আসা ভারতীয় এ গাঁজার চালানটি পাবনার দুই বড় মাদক কারবারির কাছে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পাবনার এই দুই জনের মতো রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় মোট ১ হাজার ৪৯২ জন মাদক কারবারি আছেন। মূলত তারাই এখন মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ করছেন। এরা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে মাদকদ্রব্য বিক্রি করে থাকেন। এদের অনেকেই আবার দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদকের চালান পাঠান।

গাঁজাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় আজ রোববার দুপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করা হয়। সেখানেই এসব তথ্য জানান বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহা. জিললুর রহমান। 

জিললুর রহমান জানান, বড় মাদক কারবারিদের তালিকাটি প্রতিনিয়তই হালনাগাদ করা হয়। সর্বশেষ হালনাগাদের সময় রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় এদের সংখ্যা ১ হাজার ৪৯২ জন পাওয়া গেছে। এরা হেরোইন, গাঁজা, ইয়াবা, মদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করেন। তাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এদের দিকে নজরদারিও অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরও জানান, গত তিন-চার মাসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয় বিভাগের ৮ জেলা থেকে হাজার কেজিরও বেশি গাঁজা জব্দ করেছে। সব তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, দেশে এখন গাঁজা ঢুকছে কুমিল্লা এবং কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে। রাজশাহীর ৮ জেলার মধ্যে নওগাঁ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে যাচ্ছে কুমিল্লার গাঁজা। অন্য জেলাগুলোতে যাচ্ছে কুড়িগ্রাম থেকে আসা গাঁজা। এসব গাঁজা পাচার করা হচ্ছে নানা কৌশলে। প্রধান সড়ক বাদ দিয়ে বিভিন্ন সংযোগ সড়কে ঢুকে পড়ছে মাদক পাচারকারী গাড়িগুলো। সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলে এসব মাদকের চালান ধরা কঠিন। তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

জিললুর রহমান জানান, সর্বশেষ ৩৬ কেজি গাঁজার যে চালানটি জব্দ করা হয়েছে সেটি আনা হচ্ছিল একটি একটি ডেলিভারি ভ্যানে। বদনা, কলমদানি, জগ-মগের মতো বিভিন্ন প্লাস্টিকের পণ্যের আড়ালে বিপুল পরিমাণ এই গাঁজা আনা হচ্ছিল। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের পরিচালক ফজলুর রহমান জানান, গ্রেপ্তার করার কিছুদিনের মধ্যেই মাদক কারবারিরা জামিন পেয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি এমনও দেখা গেছে যে ২৪০ কেজি গাঁজাসহ গ্রেপ্তার মাদক কারবারিরা জামিন পেয়ে আবার আমাদের হাতেই গ্রেপ্তার হয়েছেন গাঁজাসহ। এটিকেই তারা পেশা হিসেবে নিয়েছেন। প্রতিনিয়ত কৌশল পাল্টে তারা তাদের কারবার চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরাও পিঁছু লেগে থাকছি তাদের ধরার জন্য। এ জন্য সাম্প্রতিক সময়ে মাদকদ্রব্য উদ্ধার বেড়েছে।

কেয়া/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়