ঢেকে গেছে ‘বীর বাঙালি’
মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম
‘বীর বাঙালি’ ভাস্কর্যটির চারপাশে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ও কোচিং সেন্টারের পোস্টার লাগানো হয়েছে
সামনে অস্ত্র হাতে তিন মুক্তিযোদ্ধা, তাদের পেছনে উড়ছে স্বাধীন বাংলার পতাকা। ভাস্কর্যটির নাম ‘বীর বাঙালি’। নাম শুনেই বোঝা যায় এই ভাস্কর্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির মুক্তির সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। নতুন প্রজন্ম এবং সাধারণ মানুষের কাছে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরতে নগরীর দৌলতপুর নতুন রাস্তার মোড়ে এই ভাস্কর্য স্থাপন করেছে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)। কিন্তু বর্তমানে ব্যানার-ফেস্টুনের আগ্রাসনে ঢাকা পড়েছে এই ভাস্কর্যটি। ফলে কারো নজর কাড়ছে না সেটি। এ ছাড়া, ঝোপ-জঙ্গলে ভরে গেছে পুরো চত্বরটিও।
নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের শোভাবর্ধনে নির্মিত ভাস্কর্যগুলো এখন মানুষের চোঁখে পড়াই কঠিন। ভাস্কর্যগুলোর দিকে তাকালেই চোখে পড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ও নেতাকর্মীদের ব্যানার ও পোস্টার। পোস্টারের ভিড়ে ভাস্কর্য খুঁজে পাওয়ায় দুষ্কর।
সরজমিনে দেখা গেছে , নতুন রাস্তা মোড়ের পুরো ভাস্কর্যটি ঘিরে ফেলা হয়েছে ব্যানার পোস্টারে। বেশিরভাগ ব্যানার-পোস্টারই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের। ভাস্কর্যের সৌন্দর্য বর্ধনে লাগানো গাছগুলোও পড়ে আছে অযত্ন-অবহেলায়। ধুলা, ময়লা ও ঘাসের মধ্যে হারিয়ে গেছে আসল সৌন্দর্য। পানির ফোয়ারাটি বন্ধ দীর্ঘদিন ধরে। সেখানে বৃষ্টির পানি জমে আবাসস্থল গড়েছে এডিস মশা।
স্থানীয়রা জানান, সারাবছরই এখানে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের পোস্টার লাগানো থাকে। কখনো কখনো যদি পোস্টার সরিয়ে ফেলা হয় তখন রাতে আবারো পোস্টার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এছাড়াও কিছু কোচিং সেন্টার ভাস্কর্যে ব্যানার-পোস্টার লাগিয়ে তাদের প্রচার চালাচ্ছে।
নতুন রাস্তা এলাকার বাসিন্দা নাজনীন আক্তার বলেন, পোস্টারের ব্যবহারের একটা মাত্রা আছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিরা নিজেদের প্রচারণার জন্য শহরের সৌন্দর্য নষ্ট করতে পারেন না। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
নাহিদ হাসান নামের এক পথচারী বলেন, নেতারা ভাস্কর্যটির বারোটা বাজিয়ে নিজেদের প্রচারের কাজে ব্যবহার করছেন। জনপ্রতিনিধিদের এই ধরণের কর্মকাণ্ডে আমরা হতবাক হই। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুত ভাস্কর্য থেকে পোস্টার-ফেস্টুন অপসারণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্যোগ নিতে হবে।
দীর্ঘদিন ভাস্কর্যটি এমন অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকলেও কেসিসি কর্তৃপক্ষ পোস্টার অপসারণে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
কেসিসির প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবিরুল জব্বার বলেন, রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যানার ফেস্টুনের কারণে নগরীর সৌন্দর্যহানি হচ্ছে। প্রায়ই এসবের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে আবার ফেস্টুন লাগানো হয়। দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মাসুদ