প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিশ্বময় পৌঁছে দিচ্ছে ‘দৃষ্টি নন্দন কালীগঞ্জ’
রফিক সরকার, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) || রাইজিংবিডি.কম
ঢাকার খুব কাছে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা। মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ মিনিটে পৌঁছে যাওয়া যায় এ উপজেলায়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য উপজেলাটি অন্য আট দশটা উপজেলার চেয়ে একেবারেই ভিন্ন। প্রতিনিয়ত এখানে ভ্রমণ পিপাসুদের ভিড় লেগেই থাকে। আর এই উপজেলার বিভিন্ন ভ্রমণ স্থানের সৌন্দর্য সারা বিশ্বব্যাপী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে স্থানীয়ভাবে যে কয়টি ফেসবুক গ্রুপ কাজ করছে তার মধ্যে ‘দৃষ্টি নন্দন কালীগঞ্জ’ অন্যতম।
কালীগঞ্জের বেলাই বিল হলো সবুজ ফসলের মাঠ। আবার বর্ষায় ওই মাঠই সবুজের গালিচার পরিবর্তে রূপান্তরিত হয় জলরাশিতে। পুরো প্রকৃতিতে তখন প্রাণের সঞ্চার হয়। বিল বা নদীর পাড়ে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্ত, বিলের জলে হাঁসেদের ডুব-সাঁতার, নদীর ধারে সোডিয়ামের আলো-আধাঁরের খেলা, বিলের জলে জেলে ও মাঝি-মাল্লার গল্প সব কিছুই ‘দৃষ্টি নন্দন কালীগঞ্জ’-এর সদস্যরা তুলে আনছেন তাদের মুঠো ফোনের ক্লিকে। একজন নয়, দুই জন নয়, পুরো হাফ ডজন কর্মী দৃষ্টি নন্দন কালীগঞ্জ ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে নিজ উপজেলার সৌন্দর্য ছড়িয়ে দিচ্ছেন বিশ্বময়। শুধু যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজ উপজেলাকে উপস্থাপন করছেন তা কিন্তু নয়, যুব সমাজকে মাদক ও মোবাইল গেমিং থেকে দূরে রাখতে মাঝে মধ্যে তারা আয়োজন করছেন বিষয় ভিত্তিক ছবি তোলা প্রতিযোগীতারও।
শনিবার (২১ অক্টোবর) সকালে কালীগঞ্জ কেন্দ্রীয় পাঠাগারে ময়েজ উদ্দিন চত্বরে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী, পরিবেশ কর্মী ও নদী কর্মীদের উপস্থিতিতে এক অনাড়ম্বর আনুষ্ঠানিকতায় বিষয় ভিত্তিক ছবি তোলা প্রতিযোগীতায় কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ৫ জন বিজয়ীকে সম্মাননা দেওয়া হয়। বিজয়ীরা হলেন- এস.পি সুমন, ফরহাদুল ইসলাম, সুমন হোসেন সৈকত, মো. হাসিব খান ও নিলাদ্রী রিয়ানা রিয়া। আর পুরো এই আয়োজনের মিডিয়া পার্টনার ছিলো কালীগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাব।
এসময় অন্যদের মধ্যে ‘দৃষ্টি নন্দন কালীগঞ্জ’ গ্রুপের প্রধান নুরুল ইসলাম, এডমিন মোকাররাম হোসেন, শাওন ইসলাম, মডারেটর সোয়েব সুলতান অনিকসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিযোগীতায় বিজয়ীরা বলেন, রূপ সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ নিজ উপজেলার ছবি বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে পেরে নিজেদের ভাগ্যবান মনে করছেন তারা। ছবি তোলার আবেগ আর ভালবাসার খোরাক। ছবি তোলার মাধ্যমে প্রকৃতির প্রেমে পড়লে অন্য কিছুর প্রেমে না পড়লেও চলে।
মডারেটর সোয়েব সুলতান অনিক বলেন, যুব সমাজকে মাদক ও মোবাইল ফোনের বাজে ব্যবহার থেকে দূরে রাখতে দৃষ্টি নন্দন কালীগঞ্জ কর্মীদের উদ্যোগও দৃষ্টি নন্দন।
এডমিন মোকাররাম হোসেন বলেন, কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দৃষ্টি নন্দন কালীগঞ্জ গ্রুপের মাধ্যমে বিশ্বের সব ভাষাভাষী মানুষের দোরগোড়ায় এই উপজেলার সৌন্দর্য পৌঁছে দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
দৃষ্টি নন্দন কালীগঞ্জ গ্রুপের প্রধান নুরুল ইসলাম বলেন, দৃষ্টি নন্দন কালীগঞ্জ গ্রুপের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় বিষয় ভিত্তিক ছবি তোলার প্রতিযোগীতা এবং বিজয়ীদের সাধ্যমত সম্মাননা প্রদান করা হয়। এর কারণ হচ্ছে আগামী প্রজন্মকে প্রকৃতি প্রেমী হিসেবে গড়ে তোলা। তাছাড়া ছবি তোলায় তরুণ সমাজ আগ্রহী হলে তাদের মুঠো ফোনের বদ ব্যবহার বা মাদক থেকে দূরে থাকবে বলেও তিনি মনে করেন। এই গ্রুপের মাধ্যমে পুরো কালীগঞ্জকে সারা বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করতে চাই। এছাড়া এই গ্রুপটি নিয়ে ভবিষ্যতে আরও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
মাসুদ