ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

২৮ বছর পর ‘দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়ায়’ আসছেন শেখ হাসিনা

তারেকুর রহমান, কক্সবাজার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০২, ১১ নভেম্বর ২০২৩   আপডেট: ০৯:৩১, ১১ নভেম্বর ২০২৩
২৮ বছর পর ‘দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়ায়’ আসছেন শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ফটো

১৯৯৪ সালে বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকাকালীন ঘূর্ণিঝড় কবলিত মানুষের দুর্দশা দেখতে কক্সবাজার সফরে এসেছিলেন শেখ হাসিনা। ওই সময় তিনি সমুদ্র উপকূলের দুর্যোগকবলিত মাতারবাড়ীও পরিদর্শন করেন। দীর্ঘ ২৮ বছর পর আজ ‘দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়া’ খ্যাত কক্সবাজারের মাতারবাড়ী সফরে আসছেন শেখ হাসিনা।

শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র সংলগ্ন টাউনশিপ মাঠে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

১৯৯৪ সালে শেখ হাসিনার সফরকে ঘিরে তখন স্থানীয় আওয়ামী লীগ সংক্ষিপ্ত আকারে জনসভা আহ্বান করেছিল। তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতারা ধারণা করেছিলেন, জনসভায় কয়েক হাজার মানুষের সমাগম ঘটবে। কিন্তু সেদিন জনসভাস্থল মাতারবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে বিস্তৃত এলাকা জুড়ে মানুষের ঢল নেমেছিল। বাড়ি-ঘরের দরজা তালাবদ্ধ রেখে সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। অভূতপূর্ব জনসমাবেশের দৃশ্য দেখে সেই দিন আবেগে আপ্লুত হয়েছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী।

মাতারবাড়ীকে ‘মায়ের বাড়ি’ আখ্যা দিয়ে তিনি মন্তব্য করেছিলেন এটি ‘দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়া’। সেই থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ রাজনৈতিক সচেতন মহলের কাছে মাতারবাড়ী দেশের দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়া হিসেবে পরিচিত। শনিবার দীর্ঘ ২৮ বছর পর সেই দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়া সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী এবারের সফরে রেললাইন, আইকনিক রেলস্টেশন, কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গভীর সমুদ্রবন্দরের চ্যানেলসহ ১৫টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং চারটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে মহেশখালীসহ পুরো জেলা জুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে মাতারবাড়ীসহ পুরো মহেশখালী।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে দলের তৃণমূল পর্যায়ে বর্ধিত সভা করে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। চলছে স্বাগত মিছিল, মাইকিং ও প্রচারণা। তারা আশা করছেন, সমাবেশে ৫ লাখ মানুষের সমাগম ঘটবে।

স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে বৃহত্তর মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সিংহভাগ মানুষ আওয়ামী লীগ রাজনীতির সমর্থক। এই ইউনিয়নের ভোটাররা জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনেও বরাবরই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে আসছেন। মাতারবাড়ীকে দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়া আখ্যা দেওয়া শেখ হাসিনাকে স্থানীয়রা মনে করেন পরিবারের একজন। দীর্ঘ ২৮ বছর পর নিজেদের আত্মার সেই স্বজনের সফরে আসার খবরে আবেগে ভাসছেন মাতারবাড়ীবাসী। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা তাদের।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুইফ আবু সাঈদ মাহমুদ আল স্বপন বলেন, মাতারবাড়ীর মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন। এর আগে, তিনি যখন মাতারবাড়ী এসেছিলেন তখন একে বলেছিলেন তার মায়ের বাড়ি। মাতারবাড়ীর মানুষের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আত্মিক সম্পর্কের কারণে তিনি ওখানে যাচ্ছেন। এমনকি মাতারবাড়ীকে প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়া হিসেবে জানেন। মাতারবাড়ীর প্রতি তার আবেগ ও ভালবাসার শেষ নেই। সেই মাতারবাড়ীতে বাস্তবায়িত হচ্ছে গভীর সমুদ্রবন্দর ও বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ উন্নয়নের মহাযজ্ঞ।

তিনি আরও বলেন, মাতারবাড়ী আগামীর বাংলাদেশের অর্থনীতির নাভি। এখন যে কর্মযজ্ঞ হয়েছে তা যৎসামান্য, যা হবে তা আরও অনেক বড়। মহাপরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন হলে মাতারবাড়ী হয়ে উঠবে দেশের অর্থনীতির নতুন দ্বার। শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন রাষ্ট্রকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর সার্ভিস দেবে। এটি আমাদের অর্থনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করবে।

আয়োজকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। চলছে স্বাগত মিছিলসহ নানা প্রচার-প্রচারণা। লাখো মানুষের সমাগমে জনসভাকে জনসমুদ্রে রূপ দেওয়া হবে।

মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেকউল্লাহ রফিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের বড় বড় প্রকল্পগুলো মাতারবাড়ীতে বাস্তবায়ন করছেন বলে আমরা সৌভাগ্যবান। এই উপহারের জন্য দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কাছে চির কৃতজ্ঞ। তাই কৃতজ্ঞতাস্বরূপ প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় দুই দ্বীপ উপজেলার অন্তত ৩ লাখ মানুষ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলো থেকে হাজার হাজার মানুষ যোগ দেবেন।

কেআই

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়