ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

যশোরে খেঁজুর গাছিদের সম্মাননা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৪৬, ১৯ নভেম্বর ২০২৩  
যশোরে খেঁজুর গাছিদের সম্মাননা 

এলাকায় ‘খেঁজুর গাছি’ নামে পরিচিত গোলাম হোসেনের বয়স এখন ষাট ছুঁই ছুঁই। নিজের জমি-জমা তেমন নেই। যশোর শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে তিন দশক ধরে শীত মৌসুমে খেঁজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ এবং সেই রস থেকে গুড় উৎপাদন করে আসছেন তিনি। যে খেঁজুর রস ও গুড়ের জন্য যশোর জেলা বিখ্যাত; সেই ব্যান্ডিং পণ্যের ঐতিহ্য রক্ষার্থে যারা কাজ করেন যারা, সেই গোলাম হোসেনের মতো তিন গাছিকে ‘গাছি সম্মাননা’ দেওয়া হয়েছে। 

রোববার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় যশোর শহরের খড়কিতে অবস্থিত পিঠা পার্কের আয়োজনে পিঠা পার্বণ ও গাছি সম্মাননা অনুষ্ঠান হয়। সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন, শহরের খড়কির গোলাম হোসেন, আব্দুল মাজেদ ও আশরাফ হোসেন। 

অনুষ্ঠানে অতিথিরা এই গুণী তিন খেঁজুর গাছিকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। আইডিয়া পিঠা পার্কের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান উপদেষ্টা যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হামিদুল হক শাহীনের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা একরাম উদদ্দৌলা, প্রথম আলোর যশোর প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম, আজকের পত্রিকার যশোর প্রতিনিধি জাহিদ হাসান, আইডিয়া পিঠা পার্কের সমন্বয়ক সোমা খান, আইডিয়া যুব উন্নয়ন কেন্দ্রের সভাপতি তানজিয়া জাহান মমতাজ, আইডিয়া স্পোকেন এর সমন্বয়ক নাবিলা সুলতানা, উইনি গ্রুপের নির্বাহী প্রধান মল্লিকা আফরোজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস। 

অনুষ্ঠানে আইডিয়া পিঠা পার্কের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান উপদেষ্টা হামিদুল হক বলেন, বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে খেঁজুরের রস, গুড়। যশোর-ও সেই নামে বিখ্যাত। কিন্তু নেপথ্যে থেকে যারা এই কাজটি নিপুণ দক্ষতায় করেন, তারা রয়ে যান পেছনে। আজ তাদের সম্মান জানিয়েই শুরু হোক পিঠা উৎসব। সমাজব্যবস্থায় দেখা যায়, ডাক্তারের ছেলে এখন ডাক্তার হয়, শিক্ষকের ছেলে শিক্ষক হয় কিন্তু গাছি-র ছেলে আর গাছি হয় না; কারণ এই পেশায় না পান তারা যোগ্য সম্মান, না থাকে ন্যায্যমূল্য। 

গাছি গোলাম হোসেন বলেন, ‘৩৫-৪০ বছর ধরে আমি গাছ কাটি; তাও ২০-২৫ হাজার গাছ তে আমি রস বের করিছি, এখন শরীরে কুলোয় না, তাও পেটের দায়ে মাঝেসাঝে মাঠে কাজ করি। কিন্তু এই কাজ কে আগে কেউ এরাম গুরুত্ব দেয়নি বাপু, এরাম জাগায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে আসবো- এমন কথা ভাবিওনি। আমার খুব ভালো লাগছে।’  

উৎসবের একপাশে ছোট চুলা জ্বালিয়ে গ্রাম্য পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় হরেক রকমের পিঠা। পিঠার মৌ মৌ গন্ধে ভরে ওঠে পুরো অনুষ্ঠান অঙ্গন।
 

রিটন/বকুল 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়