ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন স্বামীকে হত্যা করেন স্ত্রী: র‌্যাব

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০৭, ২২ নভেম্বর ২০২৩  
ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন স্বামীকে হত্যা করেন স্ত্রী: র‌্যাব

বিয়ে হয়েছিল পারিবারিকভাবেই। এরপর স্ত্রী জড়িয়ে পড়েন পরকীয়ায়। প্রেমিকের সঙ্গে ফন্দি আঁটেন স্বামীকে হত্যার। এজন্য স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করেন। বেঁধে ফেলেন তার হাত ও পা। পরে মুখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে করা হয় শ্বাসরোধ। মৃত্যু নিশ্চিতে মুখ ও মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করেন স্ত্রী ও তার প্রেমিক। সন্দেহ থেকে বাঁচতে স্বাভাবিকভাবে সকালে চলে যান কাজে। অসুস্থতার কথা বলে দুপুরে ফেরেন বাসায়। ঘরের মেঝেতে স্বামীর মরদেহ দেখে শুরু করেন ডাক-চিৎকার। সবাইকে জানান, নিহত হয়েছেন তার স্বামী।

গত ২০ নভেম্বর ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার পলাশবাড়ি বাতানটেক এলাকায় ঘটে এই হত্যাকাণ্ড। র‍্যাব তদন্তে নেমে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে। এ ঘটনায়  মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) গ্রেপ্তার করা হয়েছে নিহতের স্ত্রী খাতিজা খাতুনকে (২৮)।

আরও পড়ুন: ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিলো হাত-পা ও মুখ বাঁধা লাশ

নিহত ব্যক্তির নাম দুরুল হোদা (৪২)। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার উত্তর ফতেহপুরের বাসিন্দা ছিলেন।

র‌্যাব-৪, সিপিসি-২ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গত ২০ নভেম্বর একটি ভাড়া বাসা থেকে দুরুল হোদা নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের স্ত্রী খাতিজা খাতুন দুপুর আড়াইটার দিকে পোশাক কারখানা থেকে বাসায় ফিরে স্বামীর মরদেহ দেখতে পেয়ে আর্তনাদ শুরু করেন। এরপর আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। ঘরের ভেতর ঢুকে নিহতের হাত-পা বাঁধা এবং মুখে স্কচটেপ দিয়ে আটকানো অবস্থায় দেখতে পান তারা। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে র‌্যাব। পরে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার নিহতের স্ত্রী খাতিজা খাতুন জানান, তার স্বামী দুরুল হোদা একটি কীটনাশক কারখানার প্যাকিংম্যান হিসেবে কাজ করতেন। তিনি নিজেও পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। ২০১১ সালে বিয়ে হয় তাদের। এরপর থেকেই দাম্পত্য কলহ চলছিল। স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে তাদের বিবাদ হতো। একপর্যায়ে খাতিজা খাতুন তার প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামী দুরুল হোদাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। স্বামীকে হত্যা করতে সন্তানদের পাঠানো হয় গ্রামের বাড়ি। ১৯ নভেম্বর রাতে স্বামীকে নিয়মিত ওষুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন খাতিজা খাতুন। দুরুল হোদা অচেতন হলে তার হাত-পা বেঁধে ও মুখ স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিতে দুরুল হোদার মুখ ও মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করেন হত্যাকারীরা।

নিজেকে সন্দেহের বাইরে রাখতে ২০ নভেম্বর সকালে খাতিজা খাতুন কাজে যান। দুপুরে তিনি অসুস্থতার কথা বলে বাসায় ফেরেন। ঘরের মেঝেতে স্বামীর মরদেহ দেখে চিৎকার করেন। পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ও মামলা হয়। ওই তদন্তের জেরেই খাতিজা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

র‌্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান জানান, গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সাব্বির/মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়