নতুন পেঁয়াজ উঠলেও পাবনায় কমছে না দাম
পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
দেশের পেঁয়াজের চাহিদার এক-চতুর্থাংশ উৎপাদন হয় উত্তরের জেলা পাবনায়। অথচ নতুন পেঁয়াজ উঠলেও বাজারের অস্থিরতা কাটছে না এই জেলায়। ভারত থেকে আমদানি বন্ধের খবরে এক দিনের ব্যবধানে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। প্রশাসনের অভিযানেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
কৃষকরা বলছেন, উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় বর্তমান বাজারদরে সন্তুষ্ট তারা। আর পাইকাররা দুষছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হওয়াকে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত কেন্দ্রিক আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির পরামর্শ নাগরিক সমাজের।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) ভোরে সরেজমিনে জেলার সুজানগর পেঁয়াজের হাটে গিয়ে দেখা যায়, কাকডাকা ভোর থেকে জমজমাট কেনাবেচা চলছে। উঠেছে আগাম জাতের মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজ। কিন্তু কমেনি পেঁয়াজের দাম।
কৃষক, পাইকার আর খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত দুই দিন ধরেই অস্থির পাবনার পেঁয়াজের বাজার। পাইকারি বাজারে প্রতি মণ পুরনো পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭ হাজার টাকা, আর নতুন পেঁয়াজ ৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে খুচরা বাজারে পুরনো পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। আর মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজ ১৩০ টাকা। গত দুই দিনে পুরনো পেঁয়াজ কেজিতে ৮০ টাকা এবং নতুন পেঁয়াজ কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। প্রশাসনের অভিযানেও কমছে না পেঁয়াজের দাম।
হাটে পেঁয়াজ বিক্রি করতে আসা কৃষক আব্দুল মতিন, আবুল কাশেম বলেন, উৎপাদন খরচ যে হারে বেড়েছে, তাতে বর্তমান বাজারদরে সন্তুষ্ট তারা। আমদানি বন্ধ থাকলে লাভবান হবেন কৃষক। আমদানি হলে আবারও দাম কমে যাবে।
পাইকার ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম, রাশেদ হাসান বলেন, ভারত থেকে এলসি বন্ধ হওয়ায় দাম বেড়েছে। তারা কৃষকের কাছ থেকে কিনে সামান্য লাভে ঢাকায় আড়তদারদের কাছে বিক্রি করেন। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটেরে কারণে দাম বৃদ্ধি— এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন তারা।
পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. রোকনুজ্জামান বলেন, নতুন পেঁয়াজ বাজারে ওঠায় খুব শিগগির দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে। সেইসঙ্গে প্রশাসনের সমন্বয়ে বাজার মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে।
কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) পাবনা শাখার সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, যেহেতু পেঁয়াজ আমদানির ওপর নির্ভর করে দাম ওঠা-নামা করে, অসাধু ব্যবসায়ীরা সেই সুযোগ নেয়। সেকারণে শুধু ভারতকেন্দ্রিক আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে সরকারকে বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির চিন্তা করতে হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর পাবনায় জেলায় নতুন পেঁয়াজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৮ মেট্রিক টন। আর জেলায় পেঁয়াজের চাহিদা ৪২ হাজার ৪৮০ মেট্রিক টন।
শাহীন/বকুল