ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৪ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২০ ১৪৩১

মানিকগঞ্জে খুচরা বাজারে সবজির দাম দিগুণ

জাহিদুল হক চন্দন, মানিকগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩  
মানিকগঞ্জে খুচরা বাজারে সবজির দাম দিগুণ

মানিকগঞ্জে আড়তের পাইকারি বাজার থেকে কেনা সবজি খুচরা বাজারে ভোক্তার কাছে দিগুণ দামে বিক্রি করা হচ্ছে। জেলা সদরের বৃহত্তম দুটি আড়ত ও দুটি খুচরা বাজারে ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারি ও খুচরা বাজার শীতের সবজিতে ভরপুর। বিভিন্ন প্রকার শীতকালীন সবজিতে বাজার যেন সেজেছে রঙিন সাজে। বিভিন্ন এলাকায় সবজির ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে শীতকালীন সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। তবে, খুচরা বাজারে উল্টো চিত্র দেখা গেছে। সবরকম সবজি বাজারে পাওয়া গেলেও খুচরা ও পাইকারি বাজারের দামের তারতম্য অনেক। প্রতিটি সবজি ক্রয়মূল্যের চেয়ে প্রায় দ্বিগণ দামে বিক্রি হচ্ছে। ভোক্তারা বলছেন, বাজার তদারকি আরও বাড়ালে দামের ব্যবধান অনেকটাই কমে আসবে।  

সরেজমিন বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) জেলা সদরের ভাটবাউর ও জাগীর বন্দর আড়তে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি নতুন আলু ৪০ টাকা, ফুলকপি ৩২ থেকে ৩৫ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, গাজর ৪৪ টাকা, কাঁচামরিচ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ২০ থেকে ২২ টাকা, সিম ৩৫ টাকা, নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৮০ টাকা, পাতাসহ পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, পুরাতন দেশি পেঁয়াজ ১৫০ টাকা ও মূলা ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুটি আড়তে প্রতিটি সবজির দামের পার্থক্য ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। তবে ভিন্নচিত্র দেখা গেছে, ভাটবাউর আড়ত থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শহরের পৌরসভা কাঁচাবাজারে। সেখানে প্রতিটি সবজি বিক্রি হচ্ছে প্রায় ক্রয়মূল্যের চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ ভাগ বেশি দামে। 

পৌরসভা কাঁচাবাজারে প্রতিকেজি নতুন আলু ৬০ টাকা, ফুলকপি ৬০ টাকা, টমেটো ৭৫ টাকা, গাজর ৬৫ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ৪০ টাকা, সিম ৬০ টাকা, নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ ১১০ টাকা, পাতাসহ পেঁয়াজ ৭০ টাকা, পুরাতন দেশি পেঁয়াজ ১৭০ টাকা ও মূলা ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের শহর কাঁচাবাজারের চিত্রও একই।

পৌরসভা কাঁচাবাজারের কয়েকজন খুচরা বিক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এখন এলাকায় সবজি উৎপাদন ও সরবরাহ বেশি। যে কারণে প্রতিদিন সবজির দাম কিছুটা কমে। তারা প্রায় প্রতিদিন ভোরে আড়ত থেকে চাহিদামত সবজি কিনে এনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিক্রি করেন। 

তাদের কাছে পাইকারি বাজারের সঙ্গে খুচরা বাজারের দামের পার্থক্য সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমরা কমে কিনলে কমে বিক্রি করতে পারি। এখন সবজির মূল্য সকলেরই নাগালের মধ্যে রয়েছে।’

বাজারে সবজি কিনতে আসা সজল রহমান বলেন, ‘এখন সবজির ভরা মৌসুম অধিকাংশ সবজির দাম ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন টিভি সংবাদে দেখি পাইকারি বাজারে সবজির দাম অনেক কমে বিক্রি হচ্ছে কিন্তু খুচরা বাজারে চড়া দামেই কিনতে হচ্ছে আমাদের।’

বেসরকারি চাকরিজীবি মাহবুব খান বলেন, ‘সকালে এক কেজি করে নতুন আলু, নতুন পেঁয়াজ, টমেটো ও ফুলকপি কিনেছি। তাতে আমার ৩১০ টাকা লেগেছে। এই মৌসুমে তো অনেক সবজির আবাদ হয়, তাহলে দামটা তুলনামূলকভাবে কমেনি। পাইকারি বাজারে সর্বোচ্চ এর দাম ২০০ বা ২২০ টাকা হবে। বাজারে শক্ত মনিটরিং দরকার। তাহলেও সব জিনিসের দাম আরও কমে আসবে। আমরা স্বস্তিতে বাঁচতে পারব।’

জেলা ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক শামসুন্নবী তুলিপ জানান, প্রতিটি দপ্তরকে যার যার অবস্থান থেকে শক্ত হতে হবে। বাজার তদারকি আরও বাড়াতে হবে। খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে তাদের লাভের পরিমাণটা যদি সংশ্লিষ্ট দপ্তর নির্ধারণ করে দেয়, তাহলে এই অবস্থা থেকে বের হওয়া যাবে।

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল জানান, পেঁয়াজসহ সকল সবজি যেন ভোক্তারা কমে কিনতে পারেন তার জন্য মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলায় প্রতিনিয়ত অভিযান চলমান আছে। বিক্রেতারা বেশি দামে পণ্য বিক্রি করলেই তাদের অভিযানের মাধ্যমে অর্থদণ্ড দেওয়া হচ্ছে।
 

/বকুল/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়