খুলনায় বিএনপি নেতার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তোলপাড়
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম
সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা
নিজ দলের শীর্ষ দুই নেতাকে নিয়ে কঠোর সমালোচনা করে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা। তার স্ট্যাটাস নিয়ে নানা আলোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির শুভানুধ্যায়ী হিসেবে পরিচিত এই নেতা বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে বর্তমান আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের কড়া সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) স্ট্যাটাস দেওয়ার বিষয়টি নিজেই নিশ্চিত করেছেন সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা।
নিজের আইডি থেকে সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা ফেসবুকে লেখেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠার পরে খুলনা মহানগরে এমন খারাপ অবস্থা দেখি নাই। দলের সঙ্গে এমন বেইমানি কেউ করে নাই। দলের প্রচন্ড ক্রাইসিস টাইমে ২৮ অক্টোবর থেকে আজ অবদি খুলনা মহানগর এর আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিব আজও খুলনা মহানগরের কোথাও কোনো মিটিং মিছিল করে নাই। দলের নেতাকর্মীদের খোঁজ নেয় না। প্রায় ৬০০ নেতাকর্মী জেলে, যারা বাইরে আছে তাদের কেউ খোঁজ খবর নেয় না। মহানগরী থানা ওয়ার্ড কমিটির নেতাকর্মী না অনেকটাই অসহায়।’
সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা আরও উল্লেখ করেন, ‘খুলনার জনগণ এদের চাঁদা দিতে শেষ হয়ে গেল। একটি রাজনৈতিক দল শেষ করবার জন্য এরা দুজনেই যথেষ্ট আর কাউকে লাগবে না। বর্তমানে যদি এরা মিছিলে না আসে তাহলে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মিছিল থেকে চলে যাবে।’
সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজার ফেসবুক স্ট্যাটাসের বিষয়ে খুলনা বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা ও সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাদের মোবাইল নম্বর বন্ধ।
বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি নেতৃত্বাধীন কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা। মঞ্জু-মনির বিপক্ষে দলের একটি অংশ বিদ্রোহ করে পাল্টা কর্মসূূচি শুরু করলে ওই অংশের প্রধান করা হয় সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজাকে। তার সভাপতিত্বেই বেশিরভাগ কর্মসূচি পালন করেছে শফিকুল আলম তুহিনসহ ওই অংশের নেতারা। ওই সময় সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজাকে আহ্বায়ক এবং তুহিনকে সদস্য সচিব করে কমিটি হওয়ার গুঞ্জন ছিল। কিন্তু নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন হলে সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা বাদ পড়ে যান। তারপরও নতুন কমিটির সঙ্গেই কর্মসূচি পালন করেন তিনি।
তারা আরও জানায়, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ধরপাকড় শুরু হলে আত্মগোপনে চলে যান খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা ও সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন। গত দেড় মাসে হরতাল, অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন হলেও কোনো কর্মসূচিতে তাদের দুই জনকে দেখা যায়নি। সদস্য সচিবের সঙ্গে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে যোগাযোগ করা গেলেও আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনার নাগাল পান না অধিকাংশ নেতাকর্মী। অথচ মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু নিয়মিত আদালতে গিয়ে আটক কারাবন্দি নেতাদের খোঁজ খবর নেন। এনিয়ে কমিটির শীর্ষ নেতাদের নিয়ে সমালোচনা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলেননি। সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজার ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে প্রথম ঘটনাটি সামনে আনলেন।
নূরুজ্জামান/মাসুদ