ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ নেওয়ায় পদ হারালেন ১১ আ.লীগ নেতা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৯, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১০:০১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩
স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ নেওয়ায় পদ হারালেন ১১ আ.লীগ নেতা

লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ সাত্তারের (ট্রাক প্রতীক) পক্ষে কাজ করায় আওয়ামী লীগের ১১ নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে তারা দলীয় কোনো পদের জন্য প্রার্থী হতে পারবেন না বলেও সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।

অব্যাহতি পাওয়া নেতারা হলেন- চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অহিদুজ্জামান বেগ বাবলু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন পাটোয়ারী, কোষাধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ পাটোয়ারী, শ্রম সম্পাদক নাছির পাটোয়ারী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, সদস্য সামছুল আলম বাবুল পাটোয়ারী, নুরুল আমিন, সোহরাব হোসেন রুবেল পাটোয়ারী, লোকমান মাস্টার ও মো. খালেদ।

এর আগে, একই অভিযোগে মান্দারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার সকালে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওহাবের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম এ সভায় সভাপতিত্ব করেন।

অব্যহতিপ্রাপ্ত নেতারা দলীয় কার্যক্রমে পর পর অনুপস্থিত, দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থী ও অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত রয়েছেন। এতে গঠনতন্ত্রের ৪৭ এর ১১ ধারা মোতাবেক ১০ নেতাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তারা ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের কোনো কমিটির পদে প্রার্থী হতে পারবেন না।

এদিকে, অব্যাহতি প্রাপ্ত নেতা ও মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটোয়ারী ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এতে থানা কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তিনি।

স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, আপনাদের বিরুদ্ধে খুব শিগগির আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। থানা কমিটির কোনো নেতাকে আপনারা থানা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়ে অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না। নিশ্চয় আপনারা আওয়ামী লীগের শত্রু, শেখ হাসিনার শত্রু। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন সর্বদিক চিন্তা করে একটি সুন্দর আংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উৎসাহ উদ্দীপনা দিয়ে যাচ্ছেন, আপনারা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভোটার শূন্য নির্বাচন করার জন্য দলের পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের সম্মানহানি করছেন।

যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত মোশারফ হোসেন পাটোয়ারী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের বিষয়ে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বা দলীয় কর্মীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো নির্দেশনা নেই। নৌকার প্রার্থীকে খুশি রাখতে ও নেতাকর্মীকে ভয় দেখাতে অগঠনতান্ত্রিকভাবে আমাদের অব্যাহতি দেওয়ার চিঠি দিয়েছে। অব্যাহতি দিতে হলে জেলা কমিটি কেন্দ্রে সুপারিশ করবেন। কেন্দ্র আমাদেরকে অব্যাহতি দিতে পারবে। থানা আওয়ামী লীগের দুই নেতা কোনোভাবেই আমাকে অব্যাহতি দিতে পারবেন না।

সহ-সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত অহিদুজ্জামান বেগ বাবলু বলেন, ফেসবুকে দেখেছি আমাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি যে, নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্রের পক্ষে কাজ করতে পারবে না। বহিষ্কার বা অব্যাহতির নির্দেশনাও নেই। এ ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা নিয়ে আমরা বসবো।

চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব বলেন, দলের কার্যক্রমে অনুপস্থিত, গঠনতন্ত্র পরিপন্থী ও অনৈতিক কার্যকলাপে যুক্ত থাকায় জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশনায় ১১ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতারা কোন প্রার্থীর ভোট করে তা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়।

লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক পিংকু নৌকার প্রার্থী। তার সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সাত্তার।

লিটন/কেআই

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়