বিপন্নপ্রায় বনছাগলটি কমলগঞ্জের বনবিটে অবমুক্ত
মৌলভীবাজার সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
উদ্ধার হওয়া বনছাগল
সুনামগঞ্জ জেলায় আটক বিপন্নপ্রায় বনছাগলটির স্থান হলো মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি বনে। গত মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সুনামগঞ্জ জেলার শক্তিয়ারখলা বনবিটের ঢুলারা বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় দেখা মেলে নতুন এক প্রাণীর।
বিজিবি সদস্য, স্থানীয় এলাকাবাসী ও বনবিভাগের কর্মীরা প্রাণীটিকে আটকও করেন। সুচালো দুটি শিং, খাড়া কান আর লাল রঙের প্রাণীটিকে প্রথমে সবাই ভেবেছিলেন হরিণ। পরে বনবিভাগের লোকজন সেটাকে বন্য হরিণ বা ‘রেড সেরো’ হিসেবে চিহিৃত করে। সেখান থেকে উদ্ধার করে প্রথমে লাউয়াছড়া বনপ্রাণী রেসকিউ সেন্টারে রাখে এবং পরে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহায়তায় কমলগঞ্জের রাজকান্দি বনে বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অবমুক্ত করা হয়। এটি আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত রেড সেরো বা বনছাগল।
বনভিভাগ জানায়, এক সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন বন বা ঝর্ণা অধ্যুষিত পাহাড়ি এলাকায় দেখা মিলতো বনছাগলের। কিন্তু বর্তমানে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও প্রাণীটি খুব একটা চোখে পড়ে না।
মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, অতি বিপন্নপ্রায় বনছাগল বা রেড সেরোটি উদ্ধারের পর তাদের তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসা হয়। বুধবার রাতে প্রাণীটিকে কমলগঞ্জের রাজকান্দি সংরক্ষিত বনে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সহকারী বন সংরক্ষক (ওয়াইল্ড লাইফ) জামিল মোহাম্মদ খান, জুনিয়র ওয়াইল্ড লাইফ স্কাউট তাজুল ইসলাম, সুব্রত সরকার, সাইফুল ইসলাম, স্থানীয় দুই ইউপি সদস্য চার্লেস শুভ ও নুরুল হক, স্ট্যান্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ (সিউ) টিমের সোহেল শ্যাম, খোকন থৌনাউজাম, কাজল হাজরা প্রমুখ।
বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মির্জা মেহেদী সরোয়ার বলেন, উদ্ধারের পর সেরো বা বনছাগলটি সবাই হরিণের বাচ্চা হিসেবে ধারণা করেছিলেন। পরে তারা পরীক্ষা ও বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করে নিশ্চিত হন এটি ‘রেড সেরো’ বা বনছাগল। তিনি বলেন, বাসস্থানের সংকট ও অবৈধ শিকারের কারণে এ প্রজাতির বনছাগলের অস্তিত্ব বিশ্বজুড়ে হুমকির মুখে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছাগলটি লম্বায় ৪ ফুট ও উচ্চতায় সাড়ে ৩ ফুট। ২০১৫ সালের আইইউসিএনের মূল্যায়ন অনুযায়ী সেরো বাংলাদেশে বিপন্নপ্রায় ও বিশ্বব্যাপী সংকটাপন্ন প্রাণী।
হামিদ/বকুল