ঢাকা     রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৭ ১৪৩১

নিজের শরীরে আগুন দেওয়া সেই কলেজছাত্রীর মৃত্যু

ফেনী সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪০, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩  
নিজের শরীরে আগুন দেওয়া সেই কলেজছাত্রীর মৃত্যু

প্রেমিক এড়িয়ে চলায় অভিমান করে নিজের শরীরে আগুন দেওয়া কলেজছাত্রী মাশকুরা আক্তার মুমু (১৯) মারা গেছেন। 

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার বাবা আবদুল মালেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

গত সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের লক্ষ্মীয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে নিজের শরীরে আগুন দেন মাশকুরা আক্তার মুমু। তিনি ফেনী ন্যাশনাল কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে ফেনী শহরের পাঠানবাড়ি সড়কে থাকতেন মুমু। তাদের গ্রামের বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার রামনগর এলাকায়।

লক্ষ্মিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে নাহিদ নামের এক ফল ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মুমুর। কিছুদিন ধরে তাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল। সোমবার সকালে ওই এলাকায় যান মুমু। কিছুক্ষণ পর ফটকের ভেতরে নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি।

সেদিন ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাশকুরা আক্তার মুমু সাংবাদিকদের কাছে জানিয়েছেন যে, তিনি নিজেই গায়ে আগুন দিয়েছেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লক্ষ্মিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মহিমা রাণী পাল বলেন, বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে মিটিং চলাকালে একটি ফোনকল আসায় আমি বাইরে বের হই। ফোনে কথা বলা অবস্থায় স্কুল গেটের ভেতর ওই মেয়েকে (মুমু) ঘুরাঘুরি করতে দেখি। একপর্যায়ে গেটের ভেতরে বসা অবস্থায় তার শরীরের সামনের অংশে হঠাৎ আগুন জ্বলতে দেখি। তখন সে চিৎকার করে দৌড়ে ৬০-৭০ গজ সামনে স্কুলের টিউবওয়েলের কাছে এসে বসে পড়ে। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বাজারের লোকজন ছুটে এসে তার গায়ে পানি ঢালে। এ সময় আমার গায়ের চাদর দিয়ে দগ্ধ শরীর ঢেকে দিয়েছি। 

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. রুহুল আমীন বলেন, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে ওই মেয়েকে (মুমু) স্কুল ফটকের ভেতর ঘুরাঘুরি করতে ও শহিদমিনারে বসে থাকতে দেখেছি। আমি দশম শ্রেণির ক্লাস নেওয়ার সময় কেরোসিনের গন্ধ পেয়ে শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞেস করি। তখন বাইরের এ ঘটনা জানতে পারেনি। দুপুর ১২টার দিকে অফিসকক্ষে মিটিং চলাকালে বাইরে থেকে চিৎকার শুনে বের হয়ে দগ্ধ অবস্থায় তাকে দেখতে পাই।

ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অংপ্রু মারমা বলেছেন, এ ঘটনায় মুমুর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ বা মামলা দায়ের করা হয়নি। 

রাজধানীর শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আরিফ নেওয়াজ মুঠোফোনে জানিয়েছেন, মাশকুরা আক্তার মুমু নামে অগ্নিদগ্ধ এক শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা গেছেন। তার পরিবার থানায় এসে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। এ বিষয়ে ফেনী মডেল থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ময়নাতদন্তের পরামর্শ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (৩১ ডিসেম্বর) ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

সাহাব/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়